বিএনপি কার্যালয়ে হামলা: যশোর আ.লীগের ৬৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫২
যশোর: যশোরে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ও শাহীন চাকলাদারের অনুসারী ৬৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
রোববার (৯ সেপ্টেম্বর) জেলা বিএনপির সাবেক সহআইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেছেন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির এক নেতা মামলা করেছেন। মামলার আসামিরা সবাই পলাতক। কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা যায়নি।
মামলার বাদী অ্যাডভোকেট এম এ গফুর এজাহারে লিখেছেন, গত ৪ আগস্ট আসামিরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে একত্রিত হয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শহরের লালদীঘি পাড়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান। অফিসে থাকা দুটি ল্যাপটপ ও আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করেন হামলাকারীরা। আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। পরে তারা অফিসে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর আসামিরা বোমা হামলা চালান। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চালানো হয় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে। এ সময় অফিস সহকারী মনিরুল অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা আওয়ামী লীগ শাসনামলে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহামুদ হাসান বিপু, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঈন উদ্দিন মিঠু, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, লেবুতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলন, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ, রামনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহামুদ হাসান লাইফসহ অন্যরা।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুটি পক্ষ সক্রিয় ছিল। এক পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। আরেক পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার। মাঠের রাজনীতিতে দুই দুপক্ষের সম্পর্ক ছিল দা-কুমড়ো। তবে জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দুপক্ষই মাঠে ছিল। মামলার আসামিদের অধিকাংশই দুই পক্ষেরই অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অবশ্য বলছে, ওই দিন আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের মিছিল থেকে অনুসারীরা বিএনপি অফিসে হামলার ঘটনায় অংশ নেন।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, যারা বিএনপি অফিসে হামলা চালিয়েছিল তারা আওয়ামী লীগের কেউ নয়, অতিউৎসাহী ছিলেন। প্রকৃত অপরাধীদের বাদ দিয়ে ঘটনায় জড়িত নয়, এমন অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকে আসামি করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য মামলা করা হয়েছে।
যশোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সাংবাদিকদের বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণে যাদের নাম পেয়েছি এজাহারে তাদের নাম দেওয়া হয়েছে। কে ছিল, কে ছিল না সেটা পুলিশ তদন্ত করে দেখবে।
সারাবাংলা/টিআর