এখনো ঝরছে বৃষ্টি, ভোগান্তিতে কর্মজীবীরা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:১৪
ঢাকা: টানা ৪৮ ঘণ্টা ধরে অঝোরে ঝরে যাচ্ছে বৃষ্টি, সঙ্গে রয়েছে বাতাসের ঝাঁপটা। বাতাসের গতি ও বৃষ্টি— দুটিই কিছুটা কমলেও খুব একটা সুখবর দিতে পারছে না আবহাওয়া অধিদফতর। সংস্থাটি জানিয়েছে, ঢাকাসহ দেশের ১৫ জেলার ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর কাঁদার কারণে অনেকটা ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবীরা। তার ওপরে সড়কে পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সকালে সড়কগুলোতে যানবাহন দেখা গেছে একেবারেই কম। ফলে অফিসগামীদের দীর্ঘ সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। মতিঝিলে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, গোপীবাগ থেকে মতিঝিলে হেঁটে যেতে ১০ মিনিট লাগে। কিন্তু দেখুন, হাঁটার মতো পরিস্থিতি রাস্তায় আছে কি না! গত দুই দিনের বৃষ্টিতে রাস্তা কাঁদায় ভরে গেছে। বহুদিন ধরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে এ পরিস্থিতি হয়েছে। এখন যাওয়ার জন্য একটা রিকশাও চোখে পড়ছে না।
সুমাইয়া কাজ করেন যমুনা গ্রুপে। তিনিও গোপীবাগ থেকে যাবেন গুলশানে। তিনি বলেন, করোকালীন অফিস গাড়ির সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু এখন আর সে সুযোগ নেই। এই বৃষ্টি-কাঁদায় কখন পৌঁছাবো সেটা ভাবছি। কোনো গাড়ি নেই রাস্তায়।
এদিকে স্কুল-কলেজও খোলা। সকালে মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে বেরিয়েছেন স্কুলের পথে। তবে স্কুলগুলোতে উপস্থিতি একেবারেই কম।
গোপীবাগের কিন্ডারগার্টের স্পার্কেল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষিকা মেহজাবিন সারাবাংলাকে বলেন, পরীক্ষা শেষে আজই প্রথম স্কুল খুলেছে। তার ওপরে বৃষ্টি। এ কারণে উপস্থিতি কম। তবে কিছু স্কুলে এখনো পরীক্ষা চলমান থাকায় সেগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে।
এদিকে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বাংশ এবং এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত নিয়েছে। এটি বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও এর কাছাকাছি বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে।
এ ছাড়া মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের সব বিভাগেই অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ঝড়-বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের এ প্রবণতা কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর