Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজধানীতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৭

ঢাকা: পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার উদ্যোগে শোভাযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ১২ রবিউল আউয়াল উপলক্ষে আয়োজিত জশনে জুলুসে অংশ নিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের ইমাম আন্জুমানের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন্ আহমদ আল্-হাসানীর নেতৃত্বে শোভাযাত্রা ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করে।

বিজ্ঞাপন

এদিন সকাল ১১টার দিকে রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ হতে জশনে জুলুস বের হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নবী প্রেমিক জনতার বিভিন্ন ইসলামিক হামদ, নাত ও শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজপথ। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অংশগ্রহণকারীদের হাতে কলেমা তৈয়াবা, জাতীয় পতাকা, আন্জুমানের পতাকা এবং নানা ধরনের বাণী ও শ্লোগান লিখিত ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা যায়।

শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, পৃথিবী থেকে অন্ধকার অনাচার ব্যভিচারসহ মানবতা বিরোধী অপরাধ দূর করতে আলোর মশাল নিয়ে শুভাগমন করেন বিশ্ব মানবতার ত্রানকর্তা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারী জাতির কোনো মর্যাদা ও অধিকারই ছিল না। মহানবী (সা.) নারী জাতিকে মর্যাদা ও শ্রদ্ধার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনিই পৃথিবীতে সাম্য মৈত্রী সুবিচার এবং সমতাভিত্তিক মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। তাই মহানবীর (সা.) এই দুনিয়ায় শুভাগমন সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ নেয়ামত ও অনুগ্রহ।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরো বলেন, ইসলাম ধর্মেই জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সুখ সমৃদ্ধি শান্তি কামনা করা হয়েছে। এমন কোনো কাজ করতে বলা হয়নি যাতে করে ইসলামের অবমাননা করা হয়। কোরআনে বলা হয়েছে, কারও ওপরে জোর জবরদস্তি করে যেন ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া না হয়। কারও ধর্মীয় স্বাধীনতা যেন বিনষ্ট না হয়।

তিনি বলেন, আমরা সুন্নি সূফিবাদী জনতা নবী প্রেমিক উদার মুসলিম। আমরা উগ্রতা ও হটকারীতায় বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি ইসলাম কায়েম হয়েছে উদারতায়। সূফী সংস্কৃতি ও মাজারসমূহ হলো ইসলামের গৌরব ও মর্যাদার প্রতীক। তাই যারা অলি আউলিয়ার মাজার, খানকাহ, দরগাহ শরীফে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছেন, আপনারা এই গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকুন। সুন্নি সূফিবাদী জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি আর যেন উগ্রবাদীরা দেশের একটি মাজারেও হামলা করতে না পারে সে জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। যে সমস্ত মাজার, খানকাহ ভাঙ্গা হয়েছে সেগুলো পুনঃনির্মাণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যারা এই অন্যায়ের সাথে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ৩৬০ আউলিয়ার এই দেশে ইসলাম এসেছে খানকাহ, দরগাহে অবস্থান করা অলি আউলিয়ার কাছ থেকেই। অলি আউলিয়াগণই খানকাহর পাশাপাশি মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণ করে ইসলাম প্রচারে গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছেন। আমি মনে করি এক শ্রেণির উগ্রবাদীরা ধর্মের নামে উগ্রতা প্রদর্শন করে মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে মানুষকে ধর্ম বিমূখ ও নাস্তিক্যবাদকে উস্কে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের দেশ পীর আউলিয়ার দেশ। এখানে রয়েছে হযরত শাহজালাল, হযরত শাহপরান, হযরত গাউছুল আযম মাইজভাণ্ডারী, গাউছুল আযম বাবাভাণ্ডারী, শাহ্ মুখদুম, খানজাহান আলী, শাহ্ আলী বাগদাদী, খাজা এনায়েত পুরী, আমানত শাহ্, সুরেশ্বরী, বদরশাহ্, মোহছেন আউলিয়াসহ অসংখ্য জগতদ্বিখ্যাত আউলিয়া কেরামের মাজার।

মাজার ভেঙ্গে সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ঘরদুয়ার ও মন্দিরে হামলা করে ধর্মকে অবমাননা করা হচ্ছে। এতে বিশ্ববাসীর কাছে আমরা নিজেরাই নিজেদের ছোট করছি। আমি সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যার যার মতকে প্রাধান্য দিন। কারও ভিন্ন মতের উপর জুলুম কিংবা জোর জবরদস্তি থেকে বিরত থাকুন। ইসলাম মানুষকে সত্য, সুন্দর, শান্তি ও কল্যাণের পথ দেখায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সমাবেশে মূফতী মাওলানা মাকসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় অতিথি ও আলোচক ছিলেন শাহ্জাদা সৈয়দ মাহবুব-এ-মইনুদ্দীন, শাহ্জাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন, গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান খান মিয়াজি, অধ্যাপক ড. শহীদ মনজু, আন্জুমান সাধারণ সম্পাদক খলিফা মো. আলমগীর খান মাইজভাণ্ডারী, মাওলানা মূফতী খাজা বাকীবিল্লাহ আল-আযহারী, মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি মহাসচিব আব্দুল আজিজ সরকার, অতিরিক্ত মহাসচিব আবুল কালাম আজাদসহ অনান্যরা।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) জশনে জুলুস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর