‘অর্থ পাচারে গন্তব্য দেশের দায় আছে, তাদেরও পদক্ষেপ নিতে হবে’
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৪৫
ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে অর্থ ও সম্পদ পাচার হয়ে যাওয়ার পেছনে গন্তব্য দেশগুলোরও দায় আছে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ কারণেই পাচার হয়ে যাওয়া অর্থসম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে এসব দেশ ও এসব দেশের সরকারকেও পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
টিআইবি বলছে, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সিংহ ভাগ অর্থের প্রধান গন্তব্য ও সুবিধাভোগী হলো ধনী ও তথাকথিত উন্নত দেশগুলো। সাম্প্রতিক সময়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে বিতাড়িত রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকা অনেকের এসব দেশে সম্পদ জড়ো করার খবর উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ও দায়িত্বের অংশ হিসেবে পাচার হওয়া অর্থসম্পদ বাংলাদেশে ফেরাতে এসব দেশকে সহায়তা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে টিআইবি থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে পাচার হওয়া অর্থসম্পদের গন্তব্য দেশগুলোর প্রতি সুনির্দিষ্টভাবে চারটি আহ্বান জানানো হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ড অর্থ পাচারের স্বর্গে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি গত কয়েক দশকে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ, এবং এমনকি অনেক ‘অফশোর’ দ্বীপ অঞ্চলও বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, অর্থ পাচারের এ সব গন্তব্যে অত্যন্ত দক্ষ আইন সংস্থা, ট্রাস্ট কোম্পানি, অফশোর বিশেষজ্ঞ, রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, হিসাবরক্ষক, নিয়ন্ত্রক বিশেষজ্ঞ, ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা সংস্থার শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে, যারা অর্থ পাচারে গোপন চুক্তি সম্পন্ন করে থাকে। এ সব সিন্ডিকেট সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্থ পাচারকে সহজ করে তুলেছে। তারা অর্থ পাচারকারীদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিতের সঙ্গে সঙ্গে রিয়েল এস্টেট, ব্যাংকিং ও বিলাসবহুল পণ্যে লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, দুবাই ও সিঙ্গাপুরের মতো যেসব দেশ অর্থ পাচারের প্রধান গন্তব্য, সেই দেশগুলোর সরকারের প্রতি টিআইবি চারটি আহ্বান জানিয়েছে। এগুলো হলো—
- বাংলাদেশি নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন অবৈধ সম্পদ তাদের নিজস্ব আইনি প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে চিহ্নিত ও স্থগিত (ফ্রিজ) করা;
- অবৈধ স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থ ও সম্পদ আহরণকারী সিন্ডিকেট বিলুপ্তির জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া;
- চুরি যাওয়া সম্পদ ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ শুরু ও তা ত্বরান্বিত করা এবং পারস্পরিক আইনি ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মতো আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে অর্থ পাচারকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনা; এবং
- বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সংস্থা, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), সিআইডি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের প্রয়োজনীয় পেশাদারিত্ব ও আন্তর্জাতিক সক্ষমতা তৈরিতে অবদান রাখা।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
অর্থ পাচার টিআইবি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সম্পদ পাচার