Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ফারাক্কা বাঁধের কারণে সুন্দরবনের প্রতিবেশ ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০৫

রোববার বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে সুন্দরবন ও পশুর নদ রক্ষার দাবিতে মোংলা নদীতে নৌ বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সারবাংলা

বাগেরহাট: পদ্মা নদীর উজানে ভারতের দেওয়া ফারাক্কা বাঁধের কারণে সুন্দরবন ও পশুর নদের প্রতিবেশ ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিবেশ অধিকার কর্মীরা।

তারা বলছেন, ইউনেসকো সুন্দরবনের ক্ষতির প্রধানতম কারণ হিসেবে গঙ্গা নদীর উজানে ভারতের নির্মাণ করা ফারাক্কা বাঁধকে চিহ্নিত করেছে। এই বাঁধ নির্মাণের পর থেকে সুন্দরবনের নদী-খালে মিষ্টি পানির প্রবাহ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হলে গঙ্গা নদী দিয়ে মিষ্টি পানির প্রবাহ বাড়াতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে মোংলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘ফারাক্কার প্রভাবে বিপর্যস্ত সুন্দরবন ও পশুর নদ: আন্তঃসীমান্ত নদীতে বাংলাদেশের অধিকার’ শীর্ষক এক সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন। উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন ও সার্ভিস বাংলাদেশ যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, আন্তঃসীমান্ত নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। পলি পড়ে নদী-খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সভ্যতার সুযোগ যত গ্রহণ করছি, প্রকৃতি তত বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দূষণ রোধে প্লাস্টিক রিসাইকল ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা স্লুইস গেটের মাধ্যমে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে রেখেছি। প্রকৃতিনির্ভর সমাধানের বিকল্প পথ খুঁজতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, খাদ্যের অভাব ও দূষণের কারণে পশুর নদের ইলিশ মাছ ছোট হয়ে যাচ্ছে। আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ভারত ও অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত নদীর সংখ্যা ৫৪টি। এর বিপরীতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তে আন্তঃসীমান্ত নদীর সংখ্যা মাত্র তিনটি। এর মধ্যে ভারত ৩৬টি নদীর ওপর মোট ৫৪টি ব্যারাজ ও ড্যাম তৈরি করেছে।

আন্তঃসীমান্ত নদ-নদীতে বাঁধ বা কোনো প্রতিবন্ধকতা নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক আইন আছে উল্লেখ করে পরিবেশ অধিকার কর্মীরা বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য— বাংলাদেশের বিষয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই আইনগুলোর কোনো তোয়াক্কা ভারত করছে না। এ সময় অংশীরাস্ট্র হিসেবে জাতিসংঘের পানি প্রবাহ আইনে (১৯৯৭) বাংলাদেশকে অনুস্বাক্ষর করার আহ্বান জানান বক্তারা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মে. নূর আলম শেখের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কে এম রব্বানী।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস, সুন্দরবন জাদুঘরের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, অধ্যক্ষ মো. সেলিম, প্রভাষক শ্যামা প্রসাদ সেন, ড. অসিত বসু, ড. অপর্ণা অধিকারী, মোংলা সরকারি কলেজের প্রভাষক খান আরিফুজ্জামান ও খাদিজা আক্তার, সার্ভিস বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, নবলোকের প্রদীপ বিশ্বাস, সিএনআরএসের রাখি, জেলে সমিতির বিদ্যুৎ মন্ডল, আব্দুর রশিদ হাওলাদার, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার নাজমুল হক, হাছিব সরদার, রাসেল শেখ, নারীনেত্রী কমলা সরকারসহ অন্যরা।

সেমিনারের আগে সকাল ১০টায় বাপা, সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও সার্ভিস বাংলাাদেশের আয়োজনে ফারাক্কা বাঁধের অভিঘাতে বিপর্যস্ত সুন্দরবন ও পশুর নদ রক্ষার দাবিতে মোংলা নদীতে নৌ বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সারাবাংলা//টিআর

আন্তঃসীমান্ত নদী নৌ বন্ধন ফারাক্কা বাঁধ মোংলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর