যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৫২
ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগরের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন সিন্ডিকেট সদস্যের পদত্যাগের দাবিও করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকালে বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সাগরকে নিয়ে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানান তারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে ‘চাটুকারের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও,’ ‘আইন বিভাগের বারান্দায় চাটুকারের ঠাঁই নেই’, ‘জ্বালো রে জালো আগুন জালো’, ‘অ্যাকশান অ্যাকশান ডাইরেক্ট অ্যাকশান’, ‘নিপীড়ক বাইরে কেন? প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তদন্তের সময় দুই সপ্তাহ আগে শেষ হয়ে গেলেও প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। সবার সামনে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক। এই তদন্তের কাজে সহযোগিতা করা শিক্ষার্থীদেরও অনুসরণ করা হয়। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কায় আছি।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২৬ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে নাফিসা নাহিন নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগরকে ধর্ষক অভিহিত করে একটি পোস্ট করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন ২৭ আগস্ট আইন বিভাগের সভাপতি ড. সাঈদা আঞ্জুর নেতৃত্বে জরুরি একাডেমিক কমিটির সভায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ১০ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেটের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও গত ২৪ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক সাগরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিবেদনটি যৌন নিপীড়ন সেলে হস্তান্তর করা হলেও সেলটিই দীর্ঘ দিন ধরে অকার্যকর হয়ে আছে।
আইন বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী আকিল বিন তালিব বলেন, যারা ধর্ষক তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে যৌন হয়রানি সেল গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই সেলের কোনো কার্যক্রম আমরা দেখতে পাই না। আজ আমরা আমাদের বিভাগের সব শিক্ষার্থী একত্রিত হয়েছি। আমাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান রাখব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আপনাদের দাবিগুলো সিন্ডিকেটে গৃহীত হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে। তাই আমরা যৌন নিপীড়ন সেলের কাছে বিষয়টি হস্তান্তর করেছি। কিন্তু এতদিনে যেহেতু যৌন নিপীড়ন সেল এখনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি, তাই আমি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, দ্রুতই যৌন নিপীড়ন সেলকে নতুন করে সাজাবেন।’
সারাবাংলা/টিআর
যৌন নিপীড়ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাবি রাবি আইন বিভাগ সাদিকুল ইসলাম সাগর