পদ্মায় কমেছে পানি, থামছে না ভাঙন
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১৯
রাজশাহী: রাজশাহীর পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ডানতীরে ভাঙন থামেনি। এরইমধ্যে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভাঙনে তলিয়ে গেছে। আতঙ্কে এখনও অনেকেই ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে কয়েক হাজার বাড়ি এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তলিয়ে গেছে ফসলের খেত। ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকে সবকিছুই নৌকায় তুলে চলে আসছেন এ পারে। সহায়-সম্বলহীন মানুষ এখন এ পারে এসে খুঁজছেন বসবাসের নতুন ঠিকানা।
রাজশাহী নগরের ওপারে চর মাজারদিয়াড় এলাকায় ফসলি জমি এখনও পানিতে তলিয়ে আছে। তবে সেখানে এর আগে ভাঙন শুরু না হলেও শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে। পাড় ভাঙছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চক নারায়ণপুর ইউনিয়নে।
বাঘার চক নারায়ণপুরের স্থানীয়রা জানান, ফতেপুর-পলাশি রাস্তার ওপর দিয়ে এখনও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙনের কারণে ওই ইউনিয়নের আতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনে পদ্মা নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। চৌমাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও পাঠদান বন্ধ রয়েছে। আতারপাড়া, চৌমাদিয়া, দিয়াড়কাদিরপুর গ্রামের প্রায় ৭৫০টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এলাকার বেশকিছু বাড়িঘর পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি দফতরের হিসাবে, নাটোরের লালপুর উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিঘা জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এছাড়া রাজশাহীর ৯ হাজার ৬৮১ বিঘা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৪ হাজার ৮৫৭ বিঘা ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। লালপুরের বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের নওশারা সুলতানপুর, চাকলা বিনোদপুর, দিয়াড়শংকরপুর, আরাজি বাকনাই, রসুলপুর ও মোহরকয়া আংশিকসহ প্রায় ১৮টি চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে গত এক সপ্তাহ আগে পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করে। তারপর গত বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করে। সেদিন পদ্মার প্রবেশদ্বার চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখা পয়েন্টে ভোর ৬টায় পদ্মার পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ২১ দশমিক ৫ মিটার। আর শনিবার সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা এক সেন্টিমিটার কম পাওয়া যায়। এ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ২২ দশমিক ০৫ মিটার।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় পাংখা পয়েন্টে পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ২১ দশমিক ০৯ মিটার। শনিবার সকাল ৬টায় পানি কমে হয় ২১ দশমিক ২ মিটার। বিকেল ৩টায় পানি আরও কমে ২০ দশমিক ৯৩ মিটারে দাঁড়ায়।
রাজশাহীর বড়কুঠি পয়েন্টে পদ্মার বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ০৫ মিটার। এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা ও সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৮৯ মিটার। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৮১ মিটার। শনিবার ভোর ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৭৫ মিটার। আর বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ১৬ দশমিক ৭০ মিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করে। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে পানি কমছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আরও দুইদিন পানি কমবে। এরপর কয়েকদিন পানি স্থিতিশীল থাকবে। এরপর আবার পানি বাড়তে কিংবা কমতে পারে।
সারাবাংলা/ইআ