১ মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা
১০ অক্টোবর ২০২৪ ২১:১৬
ঢাকা: চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতির জের ধরে ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ কমেতে শুরু করেছে। এসব ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকদের আস্থার সংকটের কারণে আমানতের পরিমাণ কমছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের জুনের তুলনায় জুলাইয়ে, অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে তিন হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। তবে একই সময়ে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ইসলামি উইন্ডোতে আমানত বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাসের শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত ছিল তিন লাখ ৯৮ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। পরের মাস জুলাইয়ে এসব ব্যাংকের আমানত কমে দাঁড়ায় তিন লাখ ৯৪ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকায়।
এ হিসাবে এক মাসে পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে তিন হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমানত কমে যাওয়ার অর্থ ইসলামি ব্যাংকগুলোর ওপর মানুষের আস্থার অভাব দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জুনের শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ১০টি ইসলামি ব্যাংক, কয়েকটি প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামিক শাখা ও উইন্ডোগুলোর আমানত ছিল চার লাখ ৪০ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। এক মাস পর, জুলাই শেষে এ আমানতের পরিমাণ দাঁড়ায় চার লাখ ৩৭ হাজার ৪১৩ কোটি টাকায়। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে এসব ব্যাংকের আমানত কমেছে তিন হাজার ১৪ কোটি টাকা।
এদিকে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ইসলামিক উইন্ডোতে জুন শেষে আমানত ছিল ১৬ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। পরের মাস জুলাইয়ে এসব উইন্ডোতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৫৬১ কোটি টাকায়। সে হিসাবে এক মাসে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ইসলামিক উইন্ডোতে আমানত বেড়েছে ৭৫৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চলতি বছরের জুন শেষে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ইসলামি ব্যাংকিং শাখায় আমানত ছিল ২৫ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। পরে মাস জুলাইয়ে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ইসলামি ব্যাংকিং শাখাগুলোতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৪০৭ কোটি টাকায়। সে হিসাবে এক মাসে আমানত কমেছে ১৩৮ কোটি টাকা।
আমানত কমলেও ইসলামি ব্যাংকগুলোতে একই সময়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। তথ্য বলছে, জুন শেষে ইসলামি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের স্থিতি ছিল পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। আর এক মাস পর জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের স্থিতি দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ৮৪১ কোটি টাকায়। সে হিসাবে এক মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ বেশি হয়েছে এক হাজার ১০৭ কোটি টাকা।
ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আসা রফতানি আয় অবশ্য কমেছে। প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের জুন মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রফতানি আয় এসেছিল সাত হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। পরের মাস জুলাইয়ে এসেছে সাত হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রফতানি আয় কম এসেছে ২২৫ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুন শেষে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১০ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা। পরের মাস জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলো মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে সাত হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। ফলে জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় কম এসেছে দুই হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা।
সারাবাংলা/জিএস/এসআর/টিআর