সপ্তমী শেষ, কুমারী পূজা নিয়ে আসছে অষ্টমী
১০ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৪৩
ঢাকা: প্রাচীন কালে মুনি-ঋষিরা বিশ্বাস করতেন যে মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরের প্রভাব রয়েছে। কারণ মানুষের মন চৈতন্যযুক্ত। আর যাঁদের মন সৎ ও কলুষতামুক্ত, তাঁদের মধ্যে ঈশ্বরের প্রকাশ বেশি। সেজন্য কম বয়সী মেয়েদের মধ্যে এই গুণ থাকে বলেই দুর্গাপূজায় কুমারীদের মাতৃরূপে পূজা করে থাকেন। আর এই কুমারী পূজা করা হয় অষ্টমী তিথিতে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে এ পূজা অনুষ্ঠিত হবে। অষ্টমীতে কুমারী পূজার আয়োজন করতে যাচ্ছে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন।
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মহাঅষ্টমীতে এবার কুমারী পূজা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে পূজা কমিটি। আয়োজকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কুমারী পূজার সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের স্বামী শান্তিকরানন্দ মহারাজ জানিয়েছেন, ‘করোনা মহামারির সময়ও মহাঅষ্টমীতে কুমারী পূজা বাদ পড়েছিল। সংক্রমণ রোধে তখন সরকারের পক্ষ থেকে বেশি লোককে এক জায়গায় একত্রিত হতে নিষেধ করা হয়েছিল। এবারও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কুমারী পূজা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সে সিদ্ধান্ত পরে পরিবর্তন করা হয়। তাই যথারীতি যথাসময়ে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘কুমারী পূজার ধারাটা রামকৃষ্ণ মিশনেই সীমাবদ্ধ, এটি মিশনেই হয়। কুমারী পূজা রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রবর্তিত একটি প্রথা। কুমারী মেয়েদের মধ্যে তিনি দেবীর উপস্থিতি দেখতেন। এ কারণে তিনি অষ্টমীর দিন কুমারী পূজার ব্যবস্থা করেন।’
নিয়ম অনুযায়ী, ৮ থেকে ১০ বছর বয়সের কুমারী মেয়েকে দেবীরূপে পূজা করা হয়। জানা যায়, ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে কুমারী পূজা শুরু করেছিলেন। তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
পঞ্জিকা মতে, বুধবার (৯ অক্টোবর) ষষ্ঠী তিথিতে সন্ধ্যায় দেবীর আমন্ত্রণ। বুধবার (১০ অক্টোবর) সপ্তমী তিথিতে দুর্গাদেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, কল্পারম্ভ ও পূজা। শুক্রবার( ১১ অক্টোবর) মহাষ্টমী তিথিতে কুমারী পূজা শেষে সন্ধিপূজা, মহানবমী পূজা। শনিবার (১২ অক্টোবর) বিজয় দশমী তিথিতে দশমীবিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আর এর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বছরের দুর্গোৎসব।
সারাবাংলা/ জেআর/এইচআই