মাতৃরূপে পূজিত হলেন কুমারী কন্যা
১১ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৩১
ঢাকা: শ্রীরাম কৃষ্ণ বলেছেন, শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর রূপ বেশি প্রকাশ পায়। সেই ভগবতীর রূপ দর্শনের পাশাপাশি মাতৃরূপ উপলব্ধি করতেই শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর সকালে পালন বরা হয় কুমারী পূজা। কুমারী কোনো কিশোরীকে বন্দনা করা হয় মায়ের রূপে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) মহাষ্টমীর সকালে অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। বরাবরের মতো এবারও রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ কুমারী পূজার আয়োজন করেছে।
মহাঅষ্টমীর দিন সকাল ৬টা ১০ মিনিট থেকেই শুরু হয়েছে মহাঅষ্টমী কল্পারম্ভ ও অষ্টমী বিহিত পূজা। পূজা শেষে সকাল ১০টায় পুষ্পাঞ্জলি শেষে অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
মহাষ্টমীর দিন সকাল থেকেই দেবীর মহাষ্টমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা শুরু হয়। কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবী জ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা। হিন্দুশাস্ত্র মতে, সাধারণত এক থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা ব্রাহ্মণ বা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কুমারী নারীকে দেবী জ্ঞানে পূজা করা হয়।
শাস্ত্রমতে, এক বছর বয়সী কন্যাকে সন্ধ্যা, দুইয়ে সরস্বতী, তিনে ত্রিধামূর্তি, চারে কলিকা, পাঁচে সুভাগা, ছয়ে উমা, সাতে মালনী, আটে কুব্জিকা, নয়ে কালসন্দর্ভা, দশে অপরাজিতা, এগারোতে রুদ্রানী, বারোতে ভৈরবী, তেরোয় মহালক্ষ্মী, চৌদ্দতে পীঠ নায়িকা, পনেরোতে ক্ষেত্রজ্ঞা ও ষোলো বছরে অন্নদা নামে অভিহিত করা হয়।
জানা যায়, ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে কুমারী পূজা শুরু করেছিলেন। তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এই পূজা চলে আসছে।
অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে বিশ্বে শুভ শক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন দেবী দুর্গা। নবমী তিথির শুরু সন্ধিপূজা দিয়ে। অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে দেবী দুর্গার আরাধনা পূজাই হলো সন্ধিপূজা।
অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট মিলিয়ে মোট ৪৮ মিনিটে সন্ধিপূজা হয়। মূলত দেবী চামুণ্ডার পূজা করা হয় এ সময়। এ সময়েই দেবী দুর্গার হাতে বধ হয়েছিল মহিষাসুর, আর রাম বধ করেছিলেন রাবণকে।
নবমীর দিনই দুর্গাপূজার অন্তিম দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ পরদিন কেবল বিসর্জনের পর্ব। নবমীর রাতে উৎসব শেষ হয়। নবমী রাতে তাই মণ্ডপে মণ্ডপে বিদায়ের ঘণ্টা বাজে।