বিএনপির কয়েকজন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি সম্পর্কে যা বললেন রিজভী
১১ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:০৬
ঢাকা: বিপদ মুহূর্তে পাশে না দাঁড়িয়ে বিদেশে নিরাপদ জীবন বেছে নেওয়া ‘বিএনপির কয়েকজন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি’র ব্যাপারে দলের সবাইকে ওয়াকিবহাল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, ‘গত ১৬/১৭ বছর দুর্বিষহ মহাযন্ত্রণার ফ্যাসিবাদী অপশাসন সহ্য করতে গিয়ে বিএনপির অসংখ্য প্রাণ ঝরে যায়, অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে গেছে অনেক নেতাকর্মী। চিরতরে হারিয়ে গেছে গণতন্ত্রের পক্ষে জোরাল কন্ঠস্বরের বিপ্লবী নেতাকর্মীরা। অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে পর্যুদস্ত হয়ে নিজ দেশেই বাস্তহারা শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে তারা। বিপ্লবের গুরুত্ববহ ঘটনা দেশবাসী সোনালী ভবিষ্যতের চিন্তায় যখন উদ্বুদ্ধ করছে, তখন দলের কয়েকজন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির সুবিধাবাদী ভূমিকা সম্পর্কে সবাইকে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দেশনায়ক তারেক রহমানসহ বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং ৬ মিলিয়ন নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা ও ফরমায়েশি সাজা দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির যবনিকাপাত ঘটানোর আয়োজন করা হয়েছিল। নিপীড়নের চরম অভিঘাত, অপ্রীতিকর ও মর্মপীড়াদায়ক ঘটনার ধারায় নিপীড়নের চাপে জর্জরিত নেতাকর্মীরা যখন অসহায় এবং ধ্বংসের মুখোমুখি, ঠিক সেই সময় নিজেদের আত্মসুখ বৃদ্ধির জন্য দেশ ও দল ছেড়ে অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমায়। এই দুঃসময়ে অনেকেরই কোনো খবর ছিল না। ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনুকূল পরিবেশে নিজ স্বার্থ সংরক্ষণ ও স্বার্থ বৃদ্ধির মানসে নিজ অনুকূলে প্রশাসনকে প্রভাবিত করাসহ নানা প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছে বলে দল বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছে।’
রিজভী বলেন, ‘এক্ষেত্রে জনপ্রশাসন, পুলিশ ও মিডিয়া হাউসকে টার্গেট করে দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ কেউ ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। অথচ দলের দুঃসময় নেতাকর্মীদের ওপর যখন উত্তরোত্তর ক্রমবর্ধমানভাবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পৈশাচিক নির্যাতন বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে এরা বিদেশে শান্তি ও স্বস্তিতে দিনযাপন করেছে। রাজনৈতিক দুর্যোগের ঘনঘটায় এদের জীবন কেটেছে নিরাপদে। অথচ আওয়ামী ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের পতনের পরও তাদের সৃষ্ট ক্ষতচিহ্নগুলো এখনও নিরাময় হয়নি। ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার পেটোয়া বাহিনীগুলোর ছোঁড়া বুলেট ও ধারাল অস্ত্রে দীর্ঘ দুই মাসের অধিককাল জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে এখনও প্রতিদিন কেউ না কেউ মৃত্যুবরণ করছে।’
‘এমতাবস্থায় দীর্ঘ দুঃসময়ে প্রবাসে অবস্থান করে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো জীবন-যাপন করে এখন দেশে ফিরে এসে প্রভাব খাটিয়ে আরও বেশি স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টায় তৎপর থেকে প্রশাসন, ব্যবসায়ী মহল এবং মিডিয়া হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠানে খবরদারী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি এহেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবরদারী সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ সবাইকে অনুরোধ করছি। এ সমস্ত ব্যক্তিরা কেউ বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করে না’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
সারাবাংলা/এজেড/এসআর