Sunday 13 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩০ জনকে ৩০ লাখ টাকা দিলো ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৩৮

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আহত রোগীদের আর্থিক সহায়তা দিল ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩০ জনের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১২ অক্টোবর) বেলা পৌনে ৩টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে ফাউন্ডেশনের পক্ষে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া প্রত্যেকের হাতে অনুদান ‍তুলে দেন। এ সময় তারা হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

বিজ্ঞাপন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে শহিদ মীর মুগ্ধর ভাই ও ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’র সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতি শহিদ পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও সকল আহত ব্যক্তিদের এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এটিই শেষ নয়। এই সাহায্য চলমান থাকবে বিভিন্নভাবে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জনকে ৩০ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সর্বমোট ৩৩ রোগীকে ৩৩ লাখের বেশি প্লাস ও এবং পঙ্গু হাসপাতালে আহত ৫৯ রোগীদের জন্য ৫৯ লাখ ৪১ হাজার টাকার বেশি দেওয়া হয়েছে। এই টাকাটা তাদের বিকাশের মাধ্যমে চলে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা আমাদের ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আহত ও শহিদ পরিবারকে ১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০ টাকা দিয়েছি। এ পর্যন্ত ১৭৬ জনের পরিবারকে এই আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে, যেটা চলমান থাকবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে অনেকেই চিকিৎসা নিয়েছে, অনেকেই চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। আমরা তাদের ডকুমেন্ট রাখতে বলছি। সেই খরচের টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। ঢাকা মেডিকেলে সরকারিভাবে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যারা অনেক সময় ধরে হাসপাতালে আছেন তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাদের পরিবার-পরিজন কীভাবে চলবে এ বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের শান্ত্বনা দিয়েছি। তাদের জন্য একটা ফাউন্ডেশন ও ডাটাবেজ তৈরি করেছি।’

বিজ্ঞাপন

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অনেকেই শহিদ ও আহতদের তালিকা দলীয়ভাবে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এগুলো কাজ একেবারে অনুচিত। যারা শহিদ হয়েছেন তারা দেশের বীর সন্তান। কোনো ব্যানারে কোনো গোষ্ঠীর নাম সংকুচিত করা উচিত না। যারা এই কাজটা করছে তাদের আমরা নিরুৎসাহিত করছি। এখানে বিভিন্ন দলের নেতারা অংশ নিয়েছেন, শহিদ হয়েছেন। সেই আত্মত্যাগকে যথাযথ স্বীকৃতি দিই। কোন রাজনৈতিক স্বার্থে যেন তাদের ব্যবহার না করি এই অনুরোধ থাকবে।’

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কেন হত্যা মামলা হচ্ছে? এমন এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশে গণহত্যা হয়েছে। ফ্যাসিবাদ আমাদের দেশে কায়েম ছিল। এই ফ্যসিবাদের সঙ্গে নানা ধরনের শ্রেণি-পেশার মানুষ ছিল। সাংবাদিকদের ভেতরেও সেটা ছিল। অনেকেই গণহত্যার পক্ষে সরাসরি কথা বলেছে, বৈধতা দিয়েছে। আমি মনে করি, তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা উচিত। যদি কেউ মিথ্যা মামলার শিকার হয়, সেটা আমরা দেখব। সাংবাদিকসহ অন্যরা যদি মনে করে মামলায় ভোগান্তি হচ্ছে, আমরা সেই জায়গা থেকে বিষয়টি দেখব। হত্যা মামলা যথাযথ না। যথাযথ অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা যে কথা বলছে, একই কথা কিন্তু পুলিশও বলছে যে, তাদের উপরের নির্দেশ ছিল। একই কথা সব সেক্টরই বলছে। দোষ শুধু শেখ হাসিনার, আর কারও দোষ ছিল না? প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে কী ভূমিকা রেখেছে এটা আসলে দেশের মানুষ জানে, আমরাও জানি। হয়তো মামলাগুলো যথাযথভাবে হচ্ছে না। আমরা সবাইকে আহ্বান জানিয়েছি, যেন হয়রানি মামলা না দেয়। যথাযথভাবে অভিযোগ ও প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা মামলাগুলো নিই। যথাযথ অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই না, কেউ হয়রানির শিকার হোক।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, উপ-পরিচালক ডা. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলমসহ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

সারাবাংলা/এসএসআর/পিটিএম

অনুদান আসিফ মাহমুদ জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন টপ নিউজ নাহিদ ইসলাম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর