উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে গবেষণায় নোবেলজয় ৩ অর্থনীতিবিদের
১৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৫৮ | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৩১
একটি দেশের উন্নয়নে সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী আজেমোয়লু, সাইমন জনসন ও জেমস রবিনসন। বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার উন্নয়নের যে পার্থক্য, তা বুঝতে সহায়তা করেছেন এই তিন বিজ্ঞানী।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস অর্থনীতিকে নোবেলজয়ী তিনজনের নাম ঘোষণা করে। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শেষ হলো।
দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভিন্ন দেশের সমৃদ্ধিতে এত পার্থক্য কেন দেখা যায়, তা নিয়ে নতুন ধারণা দিয়েছেন এ তিন বিজ্ঞানী। বিভিন্ন ধরনের সামাজিক প্রতিষ্ঠান কীভাবে গড়ে ওঠে ও দেশের সমৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে, তা উঠে এসেছে এই তিন অর্থনীতিবিদের গবেষণায়। যেসব দেশে আইনের শাসন ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল, সেসব দেশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে না বা ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে ধাবিত হতে পারে না। কেন এমন হয়, এই তিন অর্থনীতিবেদের গবেষণা সেটি বুঝতে সহায়তা করবে।
নোবেল কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউরোপীয়রা যখন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন এলাকায় উপনিবেশ স্থাপন করে, ওইসব সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিবর্তন দেখা দেয়। কোনো কোনো স্থনে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে, তবে সবখানে পরিবর্তনগুলো একই কায়দায় ঘটেনি। অনেক ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয়দের শোষণের মাধ্যমে উপনিবেশ স্থাপনকারীদের জন্য সম্পদ লুট করে নেওয়া। অনেক স্থানে আবার উপনিবেশ স্থাপনকারীরা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলে, যার মূলে ছিল অভিবাসী ইউরোপীয়দের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা নিশ্চিত করা।
ঔপনিবেশিক আমলে সূচিত সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এই যে পরিবর্তন, সেগুলো কীভাবে বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে পার্থক্যের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটিই নোবেলজয়ী তিন অর্থনীতিবিদের গবেষণায় উঠে এসেছে। ওই সময়ে উপনিবেশের অধীন দরিদ্র যেসব দেশে প্রতিষ্ঠানগুলোতে অন্তর্ভুক্তিমূলক চর্চা চালু করা হয়, সেগুলো সাধারণতই সমৃদ্ধ জনপদে পরিণত হয়েছে। একসময় উপনিবেশের অধীন থাকা সমৃদ্ধ দেশগুলো কেন পরবর্তী সময়ে দরিদ্র দেশে পরিণত হয় বা বিপরীতে ঘটনাও ঘটে, তার অন্যতম কারণ এটিই।
অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকব সভেনসন বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের মধ্যে আয়ের যে বিশাল পার্থক্য, সেটি কমিয়ে আনা আমাদের এই সময়ের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদরা সেই অর্জনের জন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।’
১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হলেও অর্থনীতিতে নোবেলের যাত্রা শুরু ১৯৬৯ সালে। গত বছর অর্থনীতিতে নোবেল জিতেছিলেন আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লডিয়া গোল্ডিন। এ পর্যন্ত মোট ৫৫ জন নোবেল জিতেছেন এই বিভাগে।
চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে গত ৭ অক্টোবর শুরু হয় এ বছরের নোবেল পুরস্কার। প্রতিবছরের মতো এবারও মোট ছয়টি বিভাগে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/এমপি/টিআর