ট্রেনের ধাক্কায় আহত হাতিটিকে বাঁচানো গেল না
১৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:১৩ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:১৯
চট্টগ্রাম: প্রায় ৪৪ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মেনেছে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হাতিটি। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাণী চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ডের আপ্রাণ চেষ্টার পরও হাতিটিকে বাঁচানো যায়নি।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটায় কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় ডুলাহাজরা শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে চিকিৎসাধীন থাকা হাতিটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার সংরক্ষিত চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের উত্তরে দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইনে চট্টগ্রামমুখী ট্রেনের ধাক্কায় হাতিটি গুরুতর আহত হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে যান। ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক থেকে চিকিৎসক এনে ব্যথানাশক ইনজেকশন ও বিভিন্ন ওষুধ খাইয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
হাতির চিকিৎসায় গঠিত বোর্ডের সদস্য সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি অফিসার হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাতিটির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গেছে। পেছনের ডান পা ভেঙ্গে হাড় বেরিয়ে গেছে। মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে। কান, নাক ও শুঁড় দিয়ে অনবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ইন্টারনাল ব্লিডিং এত বেশি পরিমাণে ছিল যে, সেটিকে বাঁচানো যায়নি। জরুরি ভিত্তিতে যদি অপারেশন করা যেত, তাহলে কিছুটা সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু হাতির শরীরে অস্ত্রোপচারের মতো সুবিধা আসলে আমাদের নেই। দুঃখজনক হচ্ছে, আমরা হাতিটিকে বাঁচাতে পারিনি।’
সোমবার রাতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে হাতিটির উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সস ইউনিভার্সিটির মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক বিবেক চন্দ্র সূত্রধরের নেতৃত্বে একটি বোর্ড গঠনের কথা জানানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে মঙ্গলবার ভোরে চট্টগ্রাম থেকে একটি রিলিফ ট্রেন যায় দুর্ঘটনাস্থলে। ক্রেন দিয়ে আহত হাতিটিকে ট্রেনে তুলে নেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় ডুলাহাজরা শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে।
ডা. জুলকার নাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে আমরা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালে হাতিটিকে ভর্তি করি। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন ময়নাতদন্তসহ আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সেটিকে মাটিচাপা দেওয়া হবে।’
বন বিভাগের ভাষ্য, রেললাইনের যে অংশে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটি হাতি পারাপারের স্থান। সংলগ্ন পুরো এলাকা হাতির বিচরণক্ষেত্র।
দলবেঁধে ওই এলাকায় বিচরণের সময় ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী মাদি হাতিটি দলছুট হয়ে রেললাইনের ওপর এসে পড়ে এবং ট্রেনের ধাক্কায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
সারাবাংলা/আরডি/এইচআই