শাহাদাতের শপথ আগামী সপ্তাহে
১৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২৯
চট্টগ্রাম: দেশের ১২ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর ফলে আদালতের রায়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষিত বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেনের শপথ নিতে আর কোনো আইনি বাধা রইল না। চসিকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের যে কোনোদিন শাহাদাতের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে।
গত ১৯ আগস্ট দেশের ১২ সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এ বিষয়ে সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে পূর্বের প্রজ্ঞাপনের তিন নম্বর ক্রমিক বিলুপ্ত করা হয়েছে। তিন নম্বর ক্রমিক ছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র সম্পর্কিত। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ১৩ (ক) প্রয়োগ করে বাংলাদেশের সিটি করপোরেশনের মেয়রদের স্ব স্ব পদ থেকে অপসারণ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। এখন ওই প্রজ্ঞাপনের ক্রমিক নম্বর ৩ বিলুপ্ত করে সংশোধন করা হলো।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শাহাদাত হোসেনের শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগও প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আগামী সপ্তাহে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।’
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠা এক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোটে বিজয়ী দেখিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করা হয়েছিল। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেনের প্রাপ্ত ভোট দেখানো হয়েছিল ৫২ হাজার ৪৮৯।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে রেজাউল করিমসহ নয়জনকে বিবাদী করে মামলা করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন। নির্বাচনে কারচুপির প্রমাণ পাওয়ায় গত ১ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন আদালত।
আদালতের রায়ের সাতদিন পর শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাবার পর শপথের ক্ষেত্রে আইনি কোনো বাধ্যবাধকতা আছে কি না, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের কাছে মতামত চাওয়া হয়।
১৪ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয় থেকে শপথের পক্ষে মতামত পাঠানো হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ মেয়রদের অপসারণ সংক্রান্ত সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করলো। এর ফলে শাহাদাত হোসেনের শপথ গ্রহণ ও মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/আরডি/এইচআই