চট্টগ্রামে বাজারে উত্তাপ অব্যাহত, বিক্রেতারা দুষছেন বন্যাকে
১৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:০৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে উত্তাপ গত সপ্তাহের মতোই বহাল আছে। শাকসবজি, ডিম, মাছ, মাংস— কয়েকটি ছাড়া প্রায় সবকিছুর দাম আগের সপ্তাহের মতোই আছে। বিক্রেতারা বলছেন, দফায় দফায় বন্যা ও বৃষ্টিপাতের কারণে নিত্যপণ্য, বিশেষ করে শাকসবজির সরবরাহ কমে গেছে। এতে বাজার অস্থির হয়ে আছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বেগুন প্রতিকেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, দেশি গাজর ১১০ টাকা, চায়না গাজর ১৬০ টাকা, বরবটি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শীতকালীন সবজি ফুলকপি মানভেদে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মূলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও শিম ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর টমেটোর কেজি ১৬০ থেকে ২২০ টাকা।
এর মধ্যে শিম, টমেটো, ফুলকপির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকার মতো কমেছে। বেগুনের দাম বেড়েছে কেজিতে অন্তত ১০ টাকা।
এ ছাড়া বাজারে কচুরমুখী ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, আলু মানভেদে ৪৫ থেকে ৭০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মিষ্টিকুমড়া, লাউয়ের দাম বেড়েছে। কমেছে ধুন্দুলের দাম।
শাকের মধ্যে লালশাকের আঁটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পাটশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা, পুঁইশাকের বিচি ১২০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, মূলাশাক ৪০ টাকা, ডাঁটাশাক ২০ টাকা, হলুদ ফুল ৪০ টাকা, কলার মোচা প্রতি পিস ৮০ টাকা, কচুশাক ২৫ টাকা, কলমি শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা ও পালংশাক ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি কচুর লতি প্রতি আঁটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং সরু লতি ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শাকের দাম গত সপ্তাহের মতোই দেখা গেছে।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের সবজির আড়তদার মোজাফফর হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের আড়তে সবজির সাপ্লাই আসে বিশেষ করে চন্দনাইশের শঙ্খ নদীর পাড়, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, ফেনীর বিভিন্ন এলাকা থেকে। বৃষ্টির কারণে চন্দনাইশে এবার সবজির ফলন ভালো হয়নি। বন্যার কারণে মীরসরাই, ফেনীতে শত, শত একর ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। সাপ্লাইটা আমরা ঠিকমতো পাচ্ছি না। বাজারে যদি মাল না থাকে, সেটার দাম তো বেশি হবেই।’
বাজারে রুই প্রতিকেজি ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩২০ টাকা, চিংড়ি ৯০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, লইট্যা ১৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, চাষের শিং ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৭০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। মাছের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল আছে।
রিয়াজউদ্দিন বাজারে মুরগির ডিম ডজনপ্রতি ১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর খুচরা দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে দাম অন্তত ৫ টাকা কমেছে। এ ছাড়া হাঁসের ডিম ডজনপ্রতি ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মাংসের দামও কিছুটা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি প্রতিকেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস হাড়ছাড়া ৯৫০ টাকা এবং হাড়সহ ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মুদির দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণের দাম অপরিবর্তিত আছে। ডালের দাম বরং কেজিপ্রতি অন্তত ৫ টাকা কমেছে। ছোট মসুরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা, ছোলা ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
চালের মধ্যে কাটারিভোগ আতপ ২৫ কেজির বস্তা দুই হাজার টাকা, বেতি আতপ ৩২০০ থেকে ৩২৫০ টাকা, হাফ সেদ্ধ নাজিরশাইল ২২০০ টাকা ও পাইজাম আতপ ১৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর
কাঁচাবাজার চট্টগ্রাম দ্রব্যমূল্য নিত্যপণ্য মাছ বাজার সবজির দাম সবজির বাজার