মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই: ডা. শফিকুর রহমান
১৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫০
নওগাঁ : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। যে দেশে মানুষ মানুষকে সন্মান করবে। সকল অধিকার নিশ্চিত হবে। কোনো বেকার থাকবেনা, সকলের কর্মসংস্থান হবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকালে নওগাঁ নওজোয়ান মাঠে জামায়াতের জেলা শাখার রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ সরকার গঠন করলে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স.) নারীদের যে সন্মান দিয়েছেন, তাদের সেই সন্মান নিশ্চিত করা হবে। এমন স্বপ্নের দেশ গঠন করা কেবল জামায়াতে ইসলামীর দ্বারা সম্ভব নয়; দেশের সকল জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থন প্রয়োজন।’
ডা. শফিকুর রহমান ‘বলেন আমরা সরকার গঠন করলে দেশের মালিক হবোনা, সেবক হবো। ইতিপূর্বে দূর অতীতেও দেখেছেন, নিকট অতীতেও দেখেছেন যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের দেশের মালিক মনে করেছে তাদের কি ভয়াবহ পরিনতি, তারা আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ হয়েছে।
একটি রাজনৈতিক দল নানাভাবে জাতিকে বিভক্ত করে রেখেছে। আমরা বিভেদ দেখতে চাইনা। কারণ বিভেদ জাতির জন্য কোন মঙ্গল আনতে পারেনা।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছর শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে আমরা ছিলাম। আল্লাহর ইচ্ছায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে জুলুমের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এই ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই দলের মত ক্ষতি আর কোন দলের করা হয়নি। অন্যায়ভাবে আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। প্রতীক কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিচারের নামে প্রহসন করে আমাদের দলের ১১জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার মধ্যে দিয়ে ওই ফ্যাসিবাদী সরকার হত্যার রাজনীতি শুরু করে।’
তিনি আরও ‘বলেছেন যুবসমাজ যুগে যুগে দেশের ক্লান্তিলগ্নে সকল অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দেশেকে রক্ষা করেছে। ঠিক তেমনই ছাত্র- জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট জুলুমবাজ সরকারের পতন হয়েছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলন পরবতীতে সরকার পতনের যে এক দফার আন্দোলন তা কোনো দলের বা কোনো গোষ্ঠির আন্দোলন ছিলনা। সে আন্দোলন ছিল দেশের সকল মানুষের আন্দোলন। এর কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার। আল্লাহর ইচ্ছায় এ বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে।’
এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নানাভাবে অসুস্থ্য হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন সেসব পরিবার জাতির বোঝা নয়, তারা জাতির সম্পদ। এসব পরিবারকে সন্মান দিতে হবে, মর্যাদা দিতে হবে। মুক্তির এই আন্দোলনে শহীদের প্রত্যেকের পরিবার থেকে একজনকে চাকুরি দিয়ে সন্মানিত করতে হবে। আহতদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তাদের বীর বলে আখ্যায়িত করে পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবেশিত করতে হবে।
নওগাঁ জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত রোকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল সহপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগর আমির ড. মো. কেরামত আলী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য খ ম আব্দুর রাকিব, ইঞ্জিনিয়ার মো. এনামুল হক, অ্যাডভোকেট আ স ম সায়েম, অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন, মওলানা হাবিবুর রহমান, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ও খুলনা মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য আ স ম মামুন শাহিন।
রোকন সম্মেলন শেষে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নওগাঁ জেলা শাখার কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। দীর্ঘ ১৮বছর পর জামায়াতে ইসলাম নওগাঁ জেলা শাখার এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
সারাবাংলা/এসআর