উপদেষ্টার হুঁশিয়ারির পর অভিযান, খোঁজ মেলেনি ‘অদৃশ্য’ সিন্ডিকেটের
২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫৫ | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:২২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে শিথিলতা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার হুঁশিয়ারির পর চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসনের গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্স।
কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, অভিযানে মূলত তারা দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর কারসাজির সঙ্গে জড়িত ‘অদৃশ্য’ সিণ্ডিকেটের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে অভিযানে চার প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড করা হলেও অদৃশ্য সিন্ডিকেটের হদিস মেলেনি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে দেশের অন্যতম বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রাম নগরীর খাতুনগঞ্জে এ অভিযান চালানো হয়। এতে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক।
এর আগে শনিবার (১৯ অক্টোবর) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া চট্টগ্রামে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্সের অভিযান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। চট্টগ্রামে টাস্কফোর্সের অভিযান অন্যান্য জেলার চেয়ে কম উল্লেখ করে উপদেষ্টা সরকারকে অসহযোগিতার চেষ্টার অভিযোগ করেন এবং এ বিষয়ে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দেন।
উপদেষ্টার ক্ষোভ প্রকাশের পরদিনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন প্রতিনিধি নিয়ে রোববার খাতুনগঞ্জে অভিযানে যান টাস্কফোর্সের সদস্যরা। অভিযানে কৃষিপণ্য বিপণন আইনের সনদ না থাকায় দ্বীন অ্যান্ড কোম্পানি ও দ্বীন অ্যান্ড সিন্ডিকেট নামে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার করে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া পণ্য কেনাবেচার পাকা রশিদ না থাকায় আল আমানত কিশমিস দোকানকে পাঁচ হাজার ও জাহানারা এন্টারপ্রাইজকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযানে আমরা দুটি দোকানকে ৫০ হাজার টাকা করে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছি। তাদের দুই মাসের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা অর্থদণ্ড পরিশোধ করায় তাদের আর কারাগারে যেতে হয়নি।’
‘কৃষিপণ্য বিপণন আইন অনুযায়ী তাদের কাছে যে লাইসেন্স থাকার কথা সেটা তাদের কাছে ছিল না। তারা যে ব্যবসা করছে তার কোনো সরকারি লাইসেন্স নেই। এ ছাড়া এখানে কোনো অদৃশ্য সিন্ডিকেট আমরা খুঁজে পাইনি। আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। যদি কোনো সিন্ডিকেট পাই সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব,’— বলেন অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল।
বিশেষ টাস্কফোর্সে থাকা ছাত্র প্রতিনিধি মো. জুবায়েদ বলেন, ‘প্রশাসনের বাধ্যবাধকতা থাকে। গতানুগতিক কথা বলে থাকেন উনারা। কিন্তু আমরা দেখেছি, অভিযান পরিচালনা করার সময় দোকানগুলোতে কোনো কাগজপত্র নেই। পণ্য কী দামে সংগ্রহ করেছে তার কোনো ডকুমেন্টস তাদের কাছে নেই। ওরা বলেছে কমিশনের ওপর তারা পণ্য রেখেছে।’
‘সিন্ডিকেট বাণিজ্য যেখান থেকে নিয়ন্ত্রিত হয় সেখানে যাওয়ার পর আমাদের দেখে অনেক দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। আগামী এক মাসের পণ্য তারা বিক্রি করে ফেলেছে। তাহলে কী দামে তারা এসব পণ্য বিক্রি করল? তাদের কাছে মজুত পণ্য দেখতে চাইলে তারা আমাদের জানায় যে পণ্যের মজুত নেই। প্রশাসনকে আমরা বলব, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক,’— বলেন ছাত্র প্রতিনিধি জুবায়েদ।
সারাবাংলা/আইসি/টিআর