‘রাজনৈতিক নেতারা চাইলে রাষ্ট্রপতি থাকবেন’
২৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:০৮
ঢাকা: গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেছেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা যদি প্রয়োজন মনে করেন তাহলে রাষ্ট্রপতি থাকবেন আর যদি না চায় তাহলে থাকবেন না। অতি উৎসাহী হয়ে কেউ দেশকে অস্থির করবেন না। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। তবে, সরকার যদি জনগণের স্বার্থে কাজ না করে তাহলে রাজপথেই তার প্রতিবাদ করা হবে।’
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও, বন্দর বাঁচাও আন্দোলন’র উদ্যাগ্যে ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল হক নূর বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির পদত্যাগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে ৪০ জন বঙ্গভবনে ঢোকার চেষ্টা করল। পুলিশ কী করল? কেন তাদের প্রতিহত করা হলো না? একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তার দায়িত্ব কে নিতো? সেখানে গণ অধিকার পরিষদের একটি ব্যানারে বিক্ষোভ করা হয়। তারা গণ অধিকার পরিষদের কেউ নয়। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব স্পষ্ট বলেছেন, এটি একটি মীমাংসীত বিষয়। এটিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল দাবি করে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেছেন, ‘তারই ধারাবাহিকতায় দেশের অর্থনীতির বড় বড় উৎসগুলো বিদেশি শক্তির কাছে দিয়ে দিয়েছে। দেশের সম্পদ দেশের মানুষ পরিচালনা করলে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং দেশের অর্থ দেশে থাকবে। কিছু অসাধু আমলা নিজেদের আখের গোছাতে দেশের ক্ষতি করছে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমরা আমাদের সম্পদ পরিচালনা করব। কোন ঘাটতি থাকলে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তা পূরণ করব। আওয়ামী লীগ সরকার বিদেশিদের কাছে মোটা অর্থের বিনিময়ে দেশীয় সম্পদ, প্রতিষ্ঠান বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছিল। চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু ট্যানেল তৈরি করা হয়েছে। তার মেইনটেইন খরচও ওঠে না। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করে সুন্দরবনকে হুকমির মুখে ফেলেছে। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘নিজের ঘরে অভাব থাকলেও নিজ সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিতে পারি না। রাষ্ট্রের কাছে বন্দর, বিমানবন্দর, সীমান্ত হচ্ছে পরিবারের অংশ। নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল জাতীয় সম্পদ এবং আয়ের উৎস। আমরা বিদেশিদের পরামর্শ নিতে পারি। আমার দেশের কোম্পানিতে আমাদের শ্রমিকরা কাজ করবে। দেশের অর্থ বিদেশে যাবে না। অদক্ষতার অজুহাতে আমরা যদি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশিদের হাতে তুলে দেই, তাহলে দেশ পরনির্ভরশীল হয়ে পড়বে।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘দেশের নৌ-বন্দর কোন বিদেশিদের হাতে দেওয়া যাবে না বলে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল। এই রায়ের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার আপিল করলে আপিল বিভাগও একই রায় বহাল রাখে। তারপরও কোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শুধু দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতেই সরকার বিদেশিদের হাতে অনেক কিছু তুলে দিয়েছে।’
রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএলডিপির মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, জমিয়ত ইসলামের মহাসচিব মুফতিসহ অনেকে।
সারাবাংলা/এনআর/এসআর