চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করা স্কুল সহকারীর মরদেহ উদ্ধার
২৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:১২ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪১
কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফে ‘চিরকুট লিখে’ আত্মহত্যা করেছেন সেখানকার এক স্কুলে কর্মরত একজন অফিস সহকারী। আত্মহত্যার পরে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
নুরুল আলম (৩৪) খারাংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নাছের পাড়ার বাসিন্দা আবু বক্করের ছেলে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের বরাতে ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘সকালে প্রতিদিনের মতো বাড়ী থেকে স্কুলে যেতে বের হন নুরুল আলম। কিন্তু ৯ টার পরও তাকে স্কুলে দেখতে না পেয়ে শিক্ষকরা তার খোঁজ নিতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল ভবনের দ্বিতীয় তালায় উঠার সিঁড়ির গ্রিল ভিতর থেকে তালাবদ্ধ দেখে শিক্ষকদের অবহিত করে। এতে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষকরা ডাকাডাকির পরও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে গ্রিলের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। পরে দ্বিতীয় তালার একটি কক্ষের মেঝেতে গলায় প্যাঁচানো অর্ধছেঁড়া রশিসহ রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। ‘
ওসি জানান, ঘটনাটি অবহিত করার পরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে। এ সময় তার শার্টের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পরে পুলিশ জানায়, ফ্যানের সিলিংয়ের সঙ্গে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এক পর্যায়ে রশিটি ছিঁড়ে গেলে তিনি মেঝেতে পড়ে যান। এতে তার গলায় ক্ষত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পরিণত হয়।
এদিকে পুলিশের উদ্ধার করা চিরকুটের একটি কপি গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে আসে।
চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও আমার স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউ দায়ী নয়। শুধুমাত্র আমার চাকুরীতা ( চাকরি করা) হচ্ছে, আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী।
– ইতি
নুরুল আলম। ‘
আত্মহত্যার কারণ এখনও অনিশ্চিত জানিয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘চিরকুটের লেখার সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে নুরুল আলমের লেখাগুলোর পর্যবেক্ষণ করে দেখা হয়েছে। এতে চিরকুটটির লেখার সঙ্গে তার হাতের লেখার প্রাথমিকভাবে মিল পাওয়া গেছে। আর এটি চূড়ান্তভাবে পরীক্ষার পর চিঠিটি নুরুল আলমের নিজ হাতে লেখা কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। ‘
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, পারিবারিক হতাশার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তারপরও ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
মৃতের ছোট বোনের জামাতা ও স্থানীয় সংবাদকর্মী হুমায়ুন রশিদ বলেন, ‘স্কুলে চাকরির পাশাপাশি নুরুল আলম পারিবারিকভাবে অনেকটা অভাব অনটনে ছিলেন। এমনকি তার স্থানীয় কারও সঙ্গে কোনো ধরণের বিরোধও ছিল না। তার আত্মহত্যা নিয়ে তারাও হতবাক।’
উদ্ধারের পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সারাবাংলা/এসডব্লিউআর