Friday 13 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শত কোটি টাকার বালু-পাথর লুট, পুলিশ-প্রশাসনের সংযোগের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৮ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৪৯ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ০০:৩৯

সুনামগঞ্জে সোমবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নদী রক্ষা নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়। ছবি: সারাবাংলা

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের ধোপাজান চলতি নদীতে গত তিন মাসে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বালু ও পাথর লুট হয়েছে। সেই বালু-পাথর লুট বন্ধে পুলিশ ভিন্ন কায়দায় নদীর প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়েছে। নদী রক্ষা নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভাও আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন।

ওই সভাতেই বালু ও পাথর লুটের সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা। তারা সভাতেই পুলিশ সুপারের পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় সভায় হট্টগোল হয়। তবে পুলিশ সুপারের দাবি, নদীর বালু-পাথর লুটের সঙ্গে যেসব পুলিশ সদস্য জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সুনামগঞ্জের ধোপাজান চলতি নদীতে হঠাৎ করেই ড্রেজার লাগিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন শুরু হয়। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি দফায় দফায় অভিযান চালিয়েও অবৈধভাবে বালু-পাথর লুট বন্ধ করতে পারেনি।

শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার বিকেলে সুনামগঞ্জ সদর থানার উদ্যাগে চলতি নদীর প্রবেশমুখে জনসাধারণের চলাচলের সরু রাস্তা রেখে বড় তিনটি বাল্কহেড দিয়ে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। এতে বন্ধ হয় নদী লুট। পরে গত দুই দিনে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে নদী লুটের মূল হোতা বাবুল ও নিজামকে গ্রেফতার করেছে।

এর মধ্যেই সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলার বিভিন্ন নদীতে অবৈধভাবে বালু ও পাথর তোলা বন্ধে শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দিক। সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া সভায় জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন।

বিজ্ঞাপন

সভা চলাকালে দুপুর ২টার দিকে সুনামগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের সময় বাধে বিপত্তি। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের যোগসাজশেই নদী থেকে বালু-পাথর লুট হচ্ছে। এ অভিযোগে তারা সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেনের পদত্যাগের দাবিও তোলেন। এ সময় তুমুল হট্টগোল শুরু হয়। পরে সভায় উপস্থিত বিভাগীয় দুই সমন্বয়ক পরিস্থিতি শান্ত করেন।

অন্য শিক্ষার্থীদের শান্ত করে সমন্বয়করাও যেকোনো অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, যে অন্যায় করবে শিক্ষার্থীরা তার রিরুদ্ধেই কথা বলবে। দেশের যেকোনো উপদেষ্টাকে পদ থেকে নামাতে শিক্ষার্থীদের মাত্র ২৪ ঘণ্টাই যথেষ্ট।

পরে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জে আমি নতুন এসেছি। তবে নদী লুটের সঙ্গে যেসব পুলিশ সদস্য জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সিলেট বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দিক বলেন, সুনামগঞ্জের নদী লুট বন্ধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে নদীকে সুরক্ষিত রাখা হবে।

সারাবাংলা/টিআর

চলতি নদী ধোপাজান চলতি নদী বালু-পাথর লুট সুনামগঞ্জ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর