যবিপ্রবিতে ফ্যাসিবাদের দোসর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণে আল্টিমেটাম
২ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৭
যশোর: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ১০ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে অপসারণের দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে এই দাবি জানান তারা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে বিগত সরকারের আমলে যবিপ্রবিতে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দুনীর্তিগ্রস্ত ও ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে তাদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার ভিতরে অপসারণের আল্টিমেটাম দেন। এই সময়ের মধ্যে তাদের দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণাও দেন সংবাদ সম্মেলন থেকে।
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত হওয়া কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা হলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার এমদাদুল হক, উপ-রেজিস্ট্রার স্ট্রেট শাখা জাহাঙ্গীর আলম, উপপরিচারক (পরিকল্পনা উন্নয়ন) ড. আব্দুর রউফ, জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদ অর্ণব, নিরাপত্তা কর্মকর্তা মুন্সী মনিরুজ্জামান, সেকশন অফিসার সাইফুর রহমান, সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সরদার ফরিদ আহমেদ, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি শওকত হোসেন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক কে এম আরিফুজ্জামান সোহাগ।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ জানান, ‘গত ১৬ বছরে দেশে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলো, সেই ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছে যবিপ্রবির কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী শিক্ষক, কর্মকর্তারা কোন রাজনীতি করতে পারবে না। তার পরেও সাবেক ভিসির ইন্ধিনে নীল দল, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ নামে স্বৈরাচারী সরকারের দুনীর্তিবাজরা তা করে গেছেন। দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও সেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন স্বপদে বহাল রয়েছে।’ এমন অবস্থায় ২৪ গণ-অভ্যুস্থানের স্পিরিটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে এসব দোসরদের অবিলম্বে বিচার ও অপসারণের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ফিশারিশ বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন লিখন বলেন, ‘গত দেড় দশক ধরে স্বৈরাচার সরকার দেশের সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে, তেমনি এই যবিপ্রতিতে কিছু দোসররা ধ্বংস করার পায়তারা করেছেন। তারা এখনোও তাদের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশ সংস্কার হলেও যবিপ্রবি এখনো সংস্কার হয়নি।’
মামুন লিখন আরও বলেন, ‘বিগত সময়ের ১০ জন দোসরদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দিয়েছি। তারা যদি আগামি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব দোসরদের অপসারণ ও আইনের আওতায় না আনে, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনে নামবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিব আহমেদ শান, ফিজিও থেরাপি বিভাগের শিক্ষার্থী ফরিদ হাসান, ফিশারিস এন্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের আল মামুন লিখন, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগরে হান্নান হোসেন, সজীব হোসেন প্রমুখ।
এই বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নামের তালিকা ও স্মারকলিপি দিয়েছে। তাদের তালিকাটি গ্রহণ করেছি। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এইচআই