সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হামলা কি না— প্রশ্ন জাপা নেতার
৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:১২ | আপডেট: ৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫৫
খুলনা: জাতীয় পার্টির খুলনা কার্যালয়ে হামলার পেছনে সরকারের মদত রয়েছে কি না, সে প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু।
তিনি বলেন, খুলনার জাতীয় পার্টি অফিসের হামলা ছিল পরিকল্পিত। আঁচ করতে পেরে আমি নিজেই বিষয়টি ১ নভেম্বর খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হয়। এরপরও কীভাবে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটল, সেটিই আমাদের প্রশ্ন। তাহলে কি ধরেই নেওয়া হবে যে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় পার্টিকে নিঃশেষ করার জন্যই এমন হামলা?
রোববার (৩ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শফিকুল ইসলাম মধু এসব কথা বলেন। এ সময় হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় খুলনার ডাকবাংলা মোড়ে খুলনা মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়। ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’ হামলা করে কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে। পরে তারা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে চেয়ার ও টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাব ভাঙচুর করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, খুলনায় জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই জড়িত নয়। বরং যারা আমাদের পার্টি অফিস দখলে নিতে চায়, তাদের উসকানিতে তৃতীয় পক্ষ এ হামলা চালিয়েছে।
মধু বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় ঠিক মাগরিবের নামাজের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার একটি ব্যানার নিয়ে শতাধিক লোকের একটি মিছিল খুলনা জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। সেখানে থাকা চেয়ার-টেবিল, ফ্যান ও দুটি টিভি ভাঙচুর করে। জেলা ও মহনগর দফতর সম্পাদকের নথিপত্রসহ নগদ ২৫ হাজার ২৯০ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের প্যানা-ছবি, বর্তমান চেয়ারম্যানের ছবি, নেতাকর্মীদের ছবিসহ পার্টি অফিসের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দিয়ে টলে যায়।
মধু অভিযোগ করে বলেন, সেখানে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা ছিল নিষ্ক্রিয়। এমনকি আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক গাড়ি আসতে চাইলে তাদেরও বাধা দেওয়া হয়। এ জন্য যথা সময়ে না আসতে পারায় আগুন নেভাতে দেরি হয়। এতে জাতীয় পার্টির অনেক ক্ষতি হয়েছে। এরও প্রায় এক ঘণ্টা পর সেনাবাহিনী ও নৌ বাহিনীর সদস্যরা এসে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন এবং ছবি তুলে নেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে জুলাই-আগস্টে জাতীয় পার্টি কী ধরনের সমর্থন ও সহায়তা দিয়েছে, সেসব তথ্য সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন জেলা সভাপতি মধু। এরপরও দলটিকে আওয়ামী লীগ তথা ফ্যাসিবাদের কথিত দোসর আখ্যা দিয়ে জনগণের কাছ থেকে জাতীয় পার্টিকে বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মধু বলেন, আমরা এ ঘটনা ও পার্টিবিরোধী চক্রান্তের তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও খুলনাসহ দেশের যেসব স্থানে জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা হয়েছে, তার সঠিক ও সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে খুলনা জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/টিআর