ওলামাদের মহাসমাবেশ জনসমুদ্র, নেই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা
৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:০১ | আপডেট: ৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:১৫
ঢাকা: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশে’র ব্যানারে আলেম-ওলামাদের মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। তবে ভেঙে পড়েছে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা। আগাম কোনো বার্তা না থাকায় কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেনি বলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের বড় সমাবেশের ক্ষেত্রে ট্রাফিক সিষ্টেম দাঁড় করাতে হয়। কোনো কোনো রোড ডিভাইডারের আওতায় আনতে হয়। চাপ কমাতে কিছু সড়ক ফাঁকা রাখতে হয়। করতে হয় বাইপাস সড়কের ব্যবস্থা। সপ্তাহের শুক্র বা শনিবারকে বেছে নিতে হয় বড় সমাবেশের জন্য। সমাবেশকারী নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ট্রাফিক বিভাগকে। কিন্তু আলেম-ওলামাদের আজকের (মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর) মহাসমাবেশের ক্ষেত্রে সবকিছু দেখে মনে হয়েছে, ডিএমপির সঙ্গে সমাবেশ আয়োজকদের কোনো সমন্বয় ছিল না। এ কারণে সড়কে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সম্মেলন ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে মানুষের উপস্থিতি ঢাবি ক্যাম্পাস, মৎস্য ভবন থেকে সোহরাওয়ার্দী সড়ক হয়ে কাকরাইল এলাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। এসব এলাকায় যানবাহন আটকে রয়েছে। যানজট এতটা তীব্র আকার ধারণ করেছে যে সব ধরনের গাড়ি সড়কে আটকে রয়েছে। এ ছাড়া দূরপাল্লার রিজার্ভ করে আনা বাসগুলো সারি সারি করে রাখার কারণে আশপাশের সড়কগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। সারা দেশ থেকে আসা আলেম-ওলামারা অনেকটা বিচ্ছিন্নভাবে সমাবেশে যাচ্ছেন, আবার অনেকে ঘোরাফেরা করছেন। এসব এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
নিত্যদিনের কাজে সড়কে বের হওয়া রাজধানীবাসী বলছেন, এ ধরনের বড় সমাবেশ অতীতেও হয়েছে। ওই সব সময়ে সমাবেশস্থলের আশপাশের কিছু সড়কে ডিভাইডার বসানো থাকে। নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সমাবেশ বিদ্যমান থাকে। এবারে সেটি লক্ষ করা যাচ্ছে না।
এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী আরমান শেখর সারাবাংলাকে বলেন, মহাখালী থেকে পল্টনে আসতে সময় লেগেছে প্রায় দুই ঘণ্টা। বাস এই চলে, এই চলে না। সবাই বলছে, সোহরাওয়ার্দীতে বড় সমাবেশ রয়েছে। সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতেও ট্রাফিক পুলিশকে বসে থাকতে দেখা গেছে। যার যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে সড়কে চলাচল করছে।
পথচারী রফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণত রাজধানীতে বড় সমাবেশের ক্ষেত্রে পুলিশ আগে থেকেই সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। কিছু সড়ক বন্ধ করে দেয়। কিছু সড়কে গাড়ি পার্কিং করে। সমাবেশের দিন সকাল থেকেই অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মাঠে কাজ করতে দেখা যায়। কিন্তু এবার তা চোখে পড়ছে না।’ পুলিশ আগে থেকে সমাবেশের কথা জানত কি না— এ প্রশ্ন করেন রফিকুল।
জানতে চাইলে ডিএমপির গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি, মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘সমাবেশ ঘিরে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। তবে ওইভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থা রাখা হয়নি।’ ডিএমপির পর্যাপ্তসংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ সড়কে কাজ করছে বলে দাবি করেন তিনি।
ডিসি মিডিয়া আরও বলেন, ‘একদিনে কয়েক লাখ লোক ঢাকা শহরে চলে এলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় একটু হোঁচট খেতেই হয়। আজকেও তাই হয়েছে। এমনিতেই ঢাকা শহরে নানা কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার ওপর এত এত লোকের সমাগম। একটু কষ্ট নগরবাসীকে সহ্য করতে হবে।’
সারাবাংলা/ইউজে/এমপি