Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যে ৫ কারণে জিততে পারেন কমলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:২৪

কমলা হ্যারিস

সব জল্পনা-কল্পনা শেষ। শেষ নির্বাচনি প্রচার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সরাসরি ব্যালটের লড়াইয়ে এখন মুখোমুখি কমলা হ্যারিস আর ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বরাজনীতির নানা সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ প্রচারের পর এবার সরাসরি ব্যালটের লড়াইয়ে তারা। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জরিপ বলছে, ডেমোক্র্যাট কমলা মাত্র ১ শতাংশ সমর্থনে এগিয়ে রয়েছেন রিপাবলিকান ট্রাম্পের চেয়ে। স্বাভাবিকভাবেই করা হচ্ছে, যেই জিতুক না কেন— ভোটের ব্যবধান হবে সামান্যই।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময়ে সকালেই শুরু হচ্ছে এই ভোটগ্রহণ। এই ভোটে কমলা জিতলে ইতিহাস হবে। প্রথম কোনো নারী প্রেসিডেন্ট পাবে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ইতিহাসে এবারই প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত কোনো নারী প্রার্থীর মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার সর্বোচ্চ সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে কমলাকে ঘিরে।

এমন ইতিহাস গড়ার ক্ষেত্রে কমলার সম্ভাবনা কতটুকু? ওয়াশিংটনে বিবিসি নিউজের বেন বেভিংটন এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন কমলার জয়ের পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে— এমন পাঁচটি কারণের কথা। একনজরে সেগুলো দেখে নেওয়া যাক—

১. ট্রাম্প নন কমলা

ট্রাম্প বিভিন্ন দিক থেকে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও আমেরিকার রাজনীতিতে মেরুকরণকারী ব্যক্তি হিসাবে রয়ে গেছেন। ২০২০ সালে তিনি রিপাবলিকান প্রার্থীর পক্ষে রেকর্ডসংখ্যক ভোট জিতেছিলেন। কিন্তু পরাজিত হয়েছিলেন, কারণ জো বাইডেন আরও ৭০ লাখ ভোটে এগিয়ে ছিলেন।

কমলা হ্যারিস ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তিনি তাকে ‘ফ্যাসিবাদী’ ও ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন। ট্রাম্পের নাটকীয় কীর্তিকলাপ ও সংঘাতের পথ থেকে সরে তিনি ভিন্ন পথে চলার অঙ্গীকার করেছেন।

জুলাইয়ে রয়টার্স/ইপসসের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজন মার্কিনির মধ্যে চারজন মনে করেন যে দেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। কমলা হ্যারিস আশা করছেন, স্থিতিশীলতা ফেরাতে ভোটাররা, বিশেষ করে মধ্যপন্থি রিপাবলিকান ও স্বতন্ত্ররা তাকে সম্ভাবনাময় একজন প্রার্থী হিসেবে দেখবে।

২. তিনি বাইডেনও নন

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে বাজে পারফরম্যান্সের পর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার মাঠ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। কমলা এ সময় দলের হাল ধরেছিলেন।

বিজ্ঞাপন

কমলা আসার পর রিপাবলিকানরা মনে করেছিলেন, বাইডেনের অজনপ্রিয় নীতিগুলোই আওড়াতে থাকবেন কমলা। তবে সেই ভুল কমলা ভেঙে দিয়েছেন নির্বাচনি প্রচারে। হুবহু বাইডেনের পথে হাঁটেননি তিনি।

ট্রাম্পকে পরাজিত করতে একাট্টা হয়ে ডেমোক্র্যাটরা দ্রুত কমলাকে নিয়ে প্রচার চালিয়েছে ও বেশ সাড়া ফেলেছে। বাইডেনের বয়স নিয়ে বিতর্ক ছিল, যেটা কমলার নেই। এখন নির্বাচনি মাঠ উলটে গেছে। এ দৌড়ে এখন ট্রাম্পই সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি।

৩. নারী অধিকারে চ্যাম্পিয়ন

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট রো ভি ওয়েড ও গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করার পর এটিই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। গর্ভপাতের অধিকার রক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভোটাররা জোরালোভাবে কমলাকে সমর্থন করছেন। অতীতের নির্বাচনগুলো, বিশেষত ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন দেখিয়েছে— মার্কিন নির্বাচনে গর্ভপাত অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে উঠতে পারে, প্রভাব ফেলতে পারে ফলাফলে।

এবার দোদুল্যমান রাজ্য তথা সুইং স্টেট অ্যারিজোনাসহ ১০টি রাজ্যে ভোটারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল গর্ভপাতের অধিকার পুনর্বহালের বিষয়ে। বেশির ভাগ ভোটারই নারীর গর্ভাপাতের পক্ষে মত দিয়েছেন। ফলে কমলা এসব ভোটার নিজের ব্যালটে পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

৪. ভোটার উপস্থিতি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা

কমলা হ্যারিসকে বেশি ভোট দেবেন তরুণ ও কলেজেপড়ুয়ারা। নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনার জরিপে দেখা গেছে, ২০২০ সালে যারা নিবন্ধিত ছিলেন কিন্তু ভোট দেননি, তাদের মধ্যে ট্রাম্প বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। এবার তারা হাজির হবেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

এ ছাড়া নির্বাচিত হলে কমলা হবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। ফলে তিনি নারী ভোটারদেরও টানবেন নিজের ব্যালটের দিকে।

৫. নির্বাচনের জন্য বিপুল অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয়

এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে আমেরিকার নির্বাচন ব্যয়বহুল। ২০২৪ সালের নির্বাচন এখন পর্যন্ত ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচন হওয়ার পথেও রয়েছে। আর সেই ভোটে খরচের শীর্ষে রয়েছেন কমলা।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে পুরো সময়ে ট্রাম্প যতটা তহবিল সংগ্রহ করতে পেরেছেন, কমলা জুলাইয়ে প্রার্থী হওয়ার পর থেকে তার চেয়ে অনেক বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছেন।

একইভাবে নির্বাচনি প্রচার ও বিজ্ঞাপনে ট্রাম্পের চেয়ে দ্বিগুণ খরচ করেছেন কমলা। তার এই খরচই কাজে আসতে পারে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর ভোটারদের দলে টানতে। বিজ্ঞাপনের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে সেখানে হ্যারিসের পক্ষে ভোট দিতে পারেন ভোটাররা।

সারাবাংলা/এইচআই/টিআর

কমলা হ্যারিস ফলাফল মার্কিন নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর