মিসিং ২ লাখ পাসের একটিও ফেরত আসেনি, যুক্ত হচ্ছে ২০ হাজার
৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:০১
ঢাকা: মেট্রোরেলে এককযাত্রার দুই লাখ পাস এখনো ফেরত পায়নি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। পাস ফিরে পেতে একাধিকবার যাত্রীদের কাছে অনুরোধ জানানো হলেও এ বিষয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে, কার্ড সংকট কাটাতে এমআরটি পাস বিক্রি সাময়িক বন্ধ রেখেছে ডিএমটিসিএল। তবে ২০ হাজার একক পাস প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। শিগগিরই এসব পাস নতুন ও রি-ইস্যু করা হবে।
মেট্রোরেল ভ্রমণের জন্য মোট তিন ধরনের পাস রয়েছে। এর মধ্যে এমআরটি পাস এবং একক পাস বা সিঙ্গেল পাস ডিএমটিসিএল’র নিজস্ব পাস। এছাড়া রয়েছে র্যাপিড পাস। যা শুধু মেট্রোই নয়, বাস, নৌ, ট্রেনেও ব্যবহার করা যাবে।
ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, আড়াই লাখ একক পাসের মধ্যে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করা যাত্রীরা দুই লাখ একক পাস নিয়ে চলে গেছে। যে কারণে কার্ড সংকট দেখা দিয়েছে। সংকটের কারণে গত ১ নভেম্বর থেকে এমআরটি ও একক পাস বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল বলেন, ‘আমাদের দুই লাখ মেট্রো পাস মিসিং। যা যাত্রীরা সঙ্গে করে নিয়ে গেছে। এসব পাস ফেরত দিতে আমরা যাত্রীদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু একটি পাসও ফেরত পাওয়া যায়নি। ফলে পাস সংকট দেখা দিয়েছে।’
এদিকে, গত চার দিন ধরে এমআরটি ও একক পাস বিক্রি বন্ধ রয়েছে। ডিএমটিসিএল জানিয়েছেন নতুন পাস ও পুরনো পাস রি- ইস্যু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমটিসিএল এর এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘এরই মধ্যে মিসিং পাস রি-কভারে ২০ হাজার পাস প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্য থেকে কিছু নতুন করে ইস্যু হবে; আর কিছু পাস রি-ইস্যু হবে।’
ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, সবগুলো স্টেশন মিলিয়ে দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৪১টি এককযাত্রার টিকেট দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে এককযাত্রার যাত্রীরা বহির্গমন গেটে বসানো নির্ধারিত মেশিনে জমা দেননি প্রায় ২ লাখ পাস। নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ৬ হাজারা ৮৮১টি পাস। দেড় হাজার কার্ড অন্যান্যভাবে হারিয়ে গেছে।
এর আগে, এক সংবাদ সম্মেলনে এসব পাস ফেরত দিতে যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়েছিলেন ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রউফ। তিনি বলেছিলেন, ‘এককযাত্রার টিকিট মেট্রোরেল স্টেশনের বাইরে নেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ।’
মেট্রোরেলের স্টেশনের কর্মীরা জানান, দেখা যায় একসঙ্গে কয়েকজন টিকেট কেটে ভ্রমণ শেষে একসঙ্গে বের হওয়ার সময় দুয়েকটি টিকিট জমা দেয়। বাকিগুলো ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃতভাবে নিয়ে যায়। অনেক যাত্রী আবার ভিড়ের মধ্যে টিকেট জমা না দিয়েও বের হয়ে যেতে পারেন। এরকম ঘটনা বেশ কয়েকবার ধরা পড়েছে বলে জানান তারা। তবে বিষয়টি সামনে আসার পর থেকে এটি কঠোর নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বহির্গমন পথের একটি শুধু একক পাসের যাত্রীদের বেরিয়ে যাওয়ার জন্য রাখা হয়। মাইকেও বলা হয়, একক পাসের যাত্রীদের একসঙ্গে বের না হতে।
স্টেশন কর্মীরা জানান, একটা বড় সংখ্যার পাস মিসিং থাকায় বর্তমানে টিকিট সংকট দেখা দিয়েছে। তারা জানান, বহির্গমন গেইটে টিকেট জমা পড়ার পর সেই টিকেট নিয়ে আবার ভেন্ডিং মেশিনে প্রবেশ করাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপেক্ষা করতে হয় বহির্গমন গেইটে পর্যাপ্ত টিকেট জমা হওয়া পর্যন্ত। যে কারণে এখন যাত্রীদের স্টেশন থেকে বের হতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম