প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আবু সাঈদের পরিবারের সাক্ষাৎ
৬ নভেম্বর ২০২৪ ২০:১৭ | আপডেট: ৬ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:১৮
ঢাকা: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহিদ আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। তারা অধ্যাপক ইউনূসকে মা-বাবার সালাম ও শুভকামনার বার্তা জানান।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আবু সাঈদের পরিবার।
আবু সাঈদের ভাইয়েরা ড. ইউনূসকে জানান, গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অধ্যাপক ইউনূস যখন তার ভাষণে আবু সাঈদ ও অন্যান্য শহিদদের আত্মত্যাগের কথা যখন বলছিলেন, তখন আবু সাঈদের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছিল।
আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘বিপ্লবে তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আপনি তুলে ধরেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার একদিন পরই রংপুরে আমাদের গ্রামে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এতে আমরা সম্মানিত বোধ করেছি।’
সাক্ষাতে তারা আবু সাঈদ হত্যা মামলার কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। আবু সাঈদের নামে একটি ফাউন্ডেশন তৈরির ইচ্ছার কথা জানান, গ্রামে একটি মডেল মসজিদ ও একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের আশাবাদও জানান। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে তারা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান।
আবু সাঈদের ছোট ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘এই ফাউন্ডেশন দরিদ্র ও জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য কাজ করবে।’
আবু সাঈদের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন তা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল। সরকার পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
আবু সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি সবসময় তোমার সঙ্গে থাকব। তোমার মা-বাবাকে আমার সালাম জানাবে।
এদিকে বুধবার মঞ্চে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দেওয়ার সময়ও আবু সাঈদের দুই ভাই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
রমজান আলী পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম। সৈন্যরা আমাদের গার্ড স্যালুট দিয়ে সম্মান জানিয়েছে। সেই অনুভূতির কথা বলে বোঝাতে পারব না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তার মৃত্যু আন্দোলনকে আরও বেগবান করে। এর জের ধরেই ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়।
৮ আগস্ট অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে পরদিন ৯ আগস্ট রংপুরে আবু সাঈদের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন।
সারাবাংলা/টিআর