Monday 02 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নারী মৎস্যজীবীদের স্বীকৃতির পক্ষে উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:০৩ | আপডেট: ৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৪

ঢাকা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্যজীবীদের মধ্যে মজুরি বৈষম্য রয়েছে। নারী মৎস্যজীবীরা এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে। বড় ধরণের সমর্থন জানাতে হবে। তাদের সঙ্গে অন্য মৎস্যজীবীদের কোন পার্থক্য করা যাবেনা।

শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সিরডাপ মিলনায়তনে ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের অধিকার সুরক্ষা, ন্যায্যতা ও তাদের টেকসই উন্নয়ন: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ বা ‘Challenges and Forward Rights of Small-Scale Fishing Communities: The Context of Bangladesh’-বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।

বিজ্ঞাপন

মৎস্যজীবী ও মৎস্য খাতে চরম বৈষম্যের প্রসঙ্গ তুলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মাছের উৎপাদনে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। কিন্তু এদেশে নারী মৎস্যজীবীরা তাদের অধিকারের দিক থেকে অনেকটা পিছিয়ে আছে। যা মৎস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তারাই প্রকৃত মৎস্যজীবী। এক্ষেত্রে কোনভাবেই ব্যবসায়ীরা অন্তর্ভূক্ত হতে পারবেনা। সুযোগ-সুবিধা দিতে পারলে মৎস্যজীবীরা আর গরীব থাকবে না।

উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা যদি মেরিন ফিশারিজকে সত্যিকার অর্থেই ব্যবহার করতে পারি বাংলাদেশ আর গরিব থাকবেনা। আমরা শুধু মৎস্য সম্পদের কথা বিবেচনা করি তাহলে দেখা যায়, এই বিশাল প্রজাতির মধ্যে অনেক প্রজাতি এখনও আমাদের আহরণের মধ্যে আসেনি। এমনকি, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের সক্ষম উন্নত ভেসেল আমাদের নেই। আমরা জানিনা সত্যিকার আমাদের কত প্রজাতির মৎস্য সম্পদ আছে, তাদের মজুদ কেমন।

সরকার নিজস্ব ভেসেল এনে এবিষয়ে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য দেশের স্বার্থে স্বনামধন্য বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

ফরিদা আখতার বলেন, চাষের মাছের ক্ষেত্রটাকে এতোটা বড় করে দেখার চেয়ে আমাদের এখন বেশি দেখা দরকার হাওরের মাছ রক্ষা করতে পারছি কি-না? নদীর মাছ রক্ষা করতে পারছি না কেন?

ইলিশ মাছ আল্লাহর দান উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, নোনা পানি থেকে স্বাদু পানিতে আসা ও ফেরত যাওয়ার মত মাইগ্রেটরি রুট ঠিক করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে। ইলিশ আমাদের বড় সম্পদে পরিণত হবে।

অতীতের সরকার ভারতের নতজানু থাকার ফলে বাংলাদেশে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এ সুযোগে সে দেশের জেলেরা আমাদের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে ইলিশ ধরে নিয়ে যেতো। বর্তমানে এ সমস্যা লাঘবে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

ভোক্তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে সবাই জান খারাপ করে দেয় এই বলে যে, ফরিদা আপা ইলিশের দাম তো কমে না! আমি কোথাও বেড়াতে গেলেও আমাকে এই কথা বলে। ভোক্তাদের আমি বলতে চাই যে, আপনাদেরও তো দায় আছে। মাছ রক্ষায় যখন মাছ ধরা ব্যান করা হয় তখন অনেক ভোক্তা অস্থির হয়ে যায়। ব্যান পিরিয়ড শুধু মৎস্যজীবীর জন্য না। ভোক্তারাও কিন্তু বিভিন্ন সেক্টরে আছেন তাদের সবাইকে চেষ্টা করতে হবে যে মাছের উৎপাদন যেন বাড়াতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাওরের মাছগুলো রক্ষা করা যাচ্ছে না। নদীর মাছ কমে যাচ্ছে। তাই আমরা দেশীয় মাছ যদি বাড়াতে না পারি শুধু পাঙ্গাস খেতে হবে।’

কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো: রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক সনৎ কুমার ভৌমিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো: জিয়া হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের পরিচালক অদ্বৈত চন্দ্র দাস, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্যাহ।এক্সপার্ট গেস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (অব) ড.আব্দুল ওয়াহাব। এছাড়াও সেমিনারে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা মতবিনিময় করেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমপি

নারী মৎস্যজীবী স্বীকৃতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর