নাসুম-মিরাজদের স্পিন জাদুতে সহজ জয়ে সমতায় বাংলাদেশ
৯ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:৪৯
প্রথম ওয়ানডের ওই ভূতুড়ে ব্যাটিং কলাপ্স কিংবা শোচনীয় হার ভুলতে এই ম্যাচটা বাংলাদেশকে জিততেই হতো। সিরিজে সমতায় ফেরার চাপটা তো সাথে ছিলই। ব্যাকফুটে থেকে দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা বাংলাদেশকে আজ জেতালেন বোলাররাই। ২৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নাসুম আহমেদ-মেহেদী হাসান মিরাজদের স্পিন জাদুতে আফগানিস্তান আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে গুটিয়ে গেছে ১৮৪-তে। ৬৮ রানের জয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরল বাংলাদেশ। সব ফরম্যাট মিলিয়ে সাত ম্যাচ পর পেল জয়ের দেখা।
বাংলাদেশ ম্যাচটা জিতল কোথায়? সপ্তম উইকেটে অভিষিক্ত জাকেরের সাথে এক বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা নাসুমের মহামূল্যবান ৪৬ রানের জুটি। যে জুটিতে ২৫০ পেরিয়েছে বাংলাদেশ। দুজনের এই কার্যকরী জুটিটাই দলকে এনে দিয়েছে লড়াইয়ের রসদ। নাসুম বল হাতেও সফলতা পেয়েছেন নিজের করা প্রথম বলেই। ম্যাচ শেষ করেছেন দলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হয়ে।
রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই চাপে পড়েছিল আফগানরা। আজও ব্যর্থ ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তাসকিনের বেরিয়ে যাওয়া এক বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে সৌম্যের হাতে ধরা পড়েছেন এই ডানহাতি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে রহমত শাহ আর সেদিকুল্লাহ আতাল ৫২ রানের জুটিতে সেই চাপটা সামলে ওঠেন। ১৬তম ওভার পর্যন্ত এই জুটিতেই ম্যাচের লাগাম নিজেদের দিকে টেনে রেখেছিল আফগানিস্তান।
কিন্ত ১৭ তম ওভারে নাসুমের হাতে বল তুলে দিতেই আসে ব্রেক থ্রু। গুড লেংথের বলে দারুণ একটা স্লগ সুইপ করেছিলেন বাঁহাতি ওপেনার আতাল। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে লাফিয়ে ওঠে দারুণ ক্ষিপ্রতায় ক্যাচটা ধরেন মিরাজ। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি ফিরে গেছেন মোস্তাফিজের বাউন্সারে শরীফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৩০ তম ওভারে নাসুমের দ্বিতীয় শিকার আজমতউল্লাহ ওমরজাই। সেই ওভারেই একপ্রান্ত আগলে রাখা রহমত শাহ রান আউটে কাটা পড়েন গুলবাদিন নাইবের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে।
আলাদা করে বলতে হবে মিরাজের কথাও। শান্ত চোট পেয়ে উঠে যাওয়ার পর অধিনায়কত্ব করেছেন, তার বোলিং চেঞ্জ কিংবা বল হাতে নিজের পারফরম্যান্সও আজ চোখে পড়ার মতো। মোহাম্মদ নবীকে যেভাবে বোল্ড করেছেন; ক্লাসিক অফ স্পিনার ডেলিভারি। তার দ্বিতীয় শিকার নাংগোলিয়া খারোটে। আফগানদের কফিনে শেষ পেরেকটাও ঠুকেছেন নাসুম, আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফারকে বোল্ড করে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে তানজিদ হাসান তামিমের স্ট্রোকপ্লেতে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচেও গাজানফারের শিকার তিনি। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সাবলীল ব্যাটিংয়ে আফগান বোলারদের সেদিনের মতো চড়ে বসতে দেননি শান্ত-সৌম্য। ৭১ রানের জুটিতে দলকে ঠিক পথেই রেখেছিলেন দুজন।
অবশ্য সৌম্যের ইনিংস হয়তো আরো বড় হতে পারত, যদি রশিদ খানের বলে লেগ বিফোর হবার পর রিভিউ নিতেন, রিপ্লের পর দেখা যায় বল পিচ করেছে লেগ স্টাম্পের বাইরে। তবে শান্ত এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন দীর্ঘক্ষণ। নবীর হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হবার আগে খেলেছেন ৭৬ রানের ইনিংস। নবম ফিফটি পেয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শান্তর পর একই ওভারে ফিরে গেছেন মাহমুদউল্লাহ।
এরপর অভিষিক্ত জাকের আলীর ২৭ বলে ৩৭* আর নাসুমের ২৪ বলে ২৬* রানের ইনিংসেই আড়াইশো ছাড়ানো স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। ৩৭ রানের ইনিংসটা জাকের গড়েছেন তিন ছক্কা আর এক চারে। তার সাথে আফগান বোলারদের চেপে বসার কোনো দেননি নাসুমও। শান্ত-মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর ব্যাট হাতে পাল্টা জবাবটা দিয়েছিলেন নাসুমই।
আগামী ১১ নভেম্বরের তৃতীয় ওয়ানডে এখন অঘোষিত ফাইনাল, সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ।
সারাবাংলা/জেটি
নাসুম আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ মেহেদী হাসান মিরাজ