Sunday 10 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা জিয়ার আবেদনের ওপর আদেশ সোমবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৩০

খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য সোমবার (১১ নভেম্বর) দিন করেছেন আদালত।

রোববার (১০ নভেম্বর) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

এর আগে, ৪ নভেম্বর খালেদা জিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুটি লিভ টু আপিলের ওপর শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর দিন ঠিক করেছিলেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি মো. রেজাউল হক।

আদালতে খালেদা পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, আইনজীবী জাকির হোসেন, আইনজীবী ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা:

২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলাটি দায়ের করেছিল। পরে ২০০৯ সালে এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এর মাঝে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদলতের নির্দেশে স্থগিত ছিল।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ হলো- এতিমদের জন্য সহায়তা হিসেবে আসা ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। কুয়েতের আমির ওই টাকা দিয়েছিল। সৌদি আরবের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যম ওই টাকা ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে সোনালী ব্যাংকের হিসাবে জমা হয়।

বিজ্ঞাপন

এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমান অভিযুক্ত হন। চূড়ান্ত অভিযোগে ছয় জনের মধ্যে আরও আছেন মমিনুর রহমান, সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক, শরফুদ্দীন আহমেদ এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী।

মামলায় ২৩৬ কার্যদিবসে ৩২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়, ২৮ কার্যদিবসে আত্মপক্ষ সমর্থন এবং ১৪ কার্যদিবস যুক্তি তর্ক শুনানি হয়।

পরে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত।

রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ কারাদণ্ড দেন।

একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায়ে খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির সবাইকে মোট দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। অর্থদণ্ডের টাকা প্রত্যেককে সম-অঙ্কে প্রদান করার কথা বলা হয়।

পরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া আপিল করেন।

কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ পৃথক আপিল করেন।

এরপর ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই তিন আসামির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

একই বছরের ২৮ মার্চ মামলার আসামি খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের রিভিশন আবেদনে রুল দেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। খালেদা জিয়ার সাজা কেন বৃদ্ধি করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।

পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ মামলায় মোট ২৮ কার্যদিবসসহ উভয়পক্ষ মোট ৩২ দিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

এছাড়া পাঁচ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া এবং ১০ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে কাজী কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল খারিজ করেন আদালত।

পরে ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন খালেদা জিয়া।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

খালেদা জিয়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর