শ্রমিক অসন্তোষে মহাসড়ক অবরোধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
১০ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৬
গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকে শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এরআগে শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন টি অ্যান্ড জেড অ্যাপারেলস লিমিটেড নামক পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।
অবরোধের কারণে রাজধানীর উত্তরা বিএনএস সেন্টার থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোতাপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই পায়ে হেঁটে ও বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে দূরপাল্লার যাত্রীরা।
স্টেশন রোড এলাকায় দেখা যায়, একটি গাড়ি কোনোভাবে ঘুরিয়ে ঢাকার দিকে যেতে চাইলে যাত্রীরা হুমরী খেয়ে পড়ছে। যানজটের কারণে গাড়ির সংকট দেখা দিয়েছে। মানুষ গন্তব্যে পৌঁছতে ভোগান্তিতে পড়েছে।
এছাড়া, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধে করে একটি ট্রাফিক আপডেট দেওয়া হয়েছে। ওই আপডেটে বলা হয়েছে, ‘সম্মানিত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ব্যবহারকারী যাত্রীবৃন্দের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গার্মেন্টসের শ্রমিকগণ কর্তৃক ভোগড়া বাইপাস ও মালেকের বাড়ির মাঝামাঝি কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে শনিবার সকালে শুরু করা মহাসড়ক অবরোধ এখন পর্যন্ত (সকাল ৭টা) অব্যাহত আছে। বিধায়, সম্মানিত যাত্রীগণকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’
জানা গেছে, মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকায় অবস্থিত টি অ্যান্ড জেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন বকেয়া আছে। তিন মাস ধরেই বেতন দাবি করলে কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করছে। ২৮ অক্টোবর শ্রমিকেরা আন্দোলন করলে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করেন। তখন পুলিশ জানায়, নভেম্বরের ৩ তারিখ বেতন পরিশোধ করা হবে। সেই দিন শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ৫ নভেম্বর আবার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করলে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ বিষয়ে সমাধান করার আশ্বাস দিলে তাঁরা ফিরে যান। তবে মাসের ৯ তারিখ হয়ে গেলেও শ্রমিকেরা বেতন পাননি। তাছাড়া, কারখানা বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ আছে। এসব কারণে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা।
শ্রমিকরা বলছেন, আমরা বেতন পাই, এটা আমাদের নায্য দাবি। গতকাল থেকেই আমরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছি। বেতন না নিয়ে বাসায় ফিরবো না। আমাদের ঘরভাড়া বাকি, দোকানে বাকি। বেতন না পেলে আমরা কোনোভাবেই চলতে পারছি না। মালিক কোথায় রয়েছে এটা আমাদের দেখার বিষয় না, আমাদের বেতন দরকার।
সকালে রাজধানীর উদ্দেশ্যে চৌরাস্তা থেকে রওনা হন মো. রুবেল সরকার বলেন, সকাল থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। চৌরাস্তা থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত ১৫০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। ভেতরের সড়ক ব্যবহার করে যাবে তাই ভাড়া বেশি। আমাদের অপরাধ কোথায়? দায়িত্বপ্রাপ্ত যারা আছে তারা কেনো এটার সমাধান করছে না?
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘তিন মাসের বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা আজও মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছি।’
সারাবাংলা/এমপি