নিখোঁজের ৭ দিন পর পুকুরে ফেলার সময় মিলল শিশুর লাশ
১০ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৬ | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:০৭
সিলেট: সিলেটের কানাইঘাটে নিখোঁজের সাত দিন পর শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুটির বাড়ির পুকুরে কিছু একটা ফেলে দেওয়ার সময় এক নারীকে আটক করেন স্থানীয়রা। এ সময় তার কাছে শিশু মুনতাহার মরদেহটি পাওয়া যায়।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে পাওয়া যায় মরদেহটি। এর আগে গত ৩ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিল শিশু মুনতাহা। তার বাবা মেয়ের সন্ধান চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলেন। মুনতাহা কানাইঘাট সদর উপজেলার বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
এ ঘটনায় মুনতাহার মরদেহ ফেলে দিতে যাওয়া নারী আলিফজান বেগমকে (৫৫) আটক করেছে পুলিশ। তিনিও মুনতাহার একই গ্রামের বাসিন্দা। আগের রাতে আলিফজানের মেয়ে মার্জিয়াকে (২৫) আটক করা হয়েছিল। মার্জিয়া শিশু মুনতাহাকে প্রাইভেট পড়াতেন। তবে এ ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কোনো কারণ মুনতাহার পরিবার বা পুলিশ কেউ এখনো জানাতে পারেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, মুনতাহার গলায় রশি প্যাচানো ছিল। তাকে আগেই শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হয়ে থাকতে পারে৷ পরে মরদেহটি পুঁতে রাখা হয়েছিল। আটক মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা জানাজানি হয়ে যেতে পারে সন্দেহে মরদেহটি তুলে পুকুরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছিল।
মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ বলেন, আমার শিশু কন্যাকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় একটি জিডি করেছিলাম। আজ (রোববার) ভোরে বাড়ির পাশের পুকুরে মুনতাহার লাশ ফেলে দেওয়ার সময় দেখতে পেয়ে লোকজন আলিফজানকে হাতেনাতে আটক করে।
কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, রোববার ভোর ৪টার দিকে নিজ বাড়ির পুকুরের পাশে মুনতাহার নিথর দেহের সন্ধান পাওয়া যায়। তার গলায় রশি প্যাচানো ছিল। শরীরে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। লাশ দেখে মনে হয়েছে, তাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর সকালে মেয়ে ও ছোট ছেলেকে নিয়ে স্থানীয় একটি মাদরাসার ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিলেন শামীম আহমদ। সেখান থেকে ফেরার পর মুনতাহা প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলতে যায়। বিকেল ৩টার দিকে তাকে খুঁজতে গিয়েও কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার। খেলার সাথীরাও মুনতাহার বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি। পরে মেয়ের সন্ধান চেয়ে থানায় জিডি করেন শামীম। বেশ কয়েকজন মুনতাহার ‘অপহণকারী’কে।ধরিয়ে দিলে।বা মুনতাহার কোনো সন্ধান দিলে পুরস্কারও ঘোষণা করেন।
সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার (কানাইঘাট সার্কেল) অলক কান্তি শর্মা বলেন, মুনতাহা নিখোঁজের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে প্রতিবেশী মার্জিয়াকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মার্জিয়ার মা মনে করেছিলেন, পুলিশ সবকিছু জেনে গেছে। এ কারণে রাতেই ডোবায় পুঁতে রাখা মুনতাহার লাশ তুলে পুকুরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। প্রতিবেশীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে পুকুরে লাশ ফেলে দেওয়ার আগেই তাকে আটক করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার ও আলিফজানকে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলিফজান ও মার্জিয়া জানিয়েছেন, মুনতাহার বাবা শামীমের সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। শামীমও কোনো বিরোধের কথা জানাননি।
সারাবাংলা/ইআ