সচিবালয়ের সামনে জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি পালন
১১ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৩১ | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪২
ঢাকা: ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ ৫ দফা, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পাইলট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বাড়ানোর দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় সচিবালয়ের সবগুলো গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি হলো- স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনা ও সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ কর্মকর্তার হাতে এ দায়িত্ব অর্পণ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের ঘোষণা, অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ ও পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল, সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণাকৃত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সব দাবি নিয়ে তাদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষা সচিব তাদের সঙ্গে দেখা না করায় তারা সচিবালয়ের প্রধান গেটের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে তারা ‘শিক্ষা সচিবকে ক্ষমা চাইতে হবে’ বলে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। এছাড়া, শিক্ষা উপদেষ্টাকে আন্দোলনে হাজির হতে আহ্বান জানান।
আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা স্মারকলিপি নিয়ে শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে সচিবালয়ে ঢুকেছিলাম। কিন্তু তিনি নিজে দেখা না করে তার প্রতিনিধি পাঠান। আমরা এটা মানি না। এখন আমাদের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টা এসে আমাদের দাবি শুনবেন। আমরা আমাদের দাবিগুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে তিন দিনের একটি আল্টিমেটাম দিয়েছি।’ সেইসঙ্গে হিট প্রকল্পের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আজকের মধ্যেই লিখিত দিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার বিষয় চিন্তা করে সচিবালয়ের সবগুলো গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে অফিস ছুটি হলেও বের হতে পারছিলেন না কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকালও এ সময় গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজও বন্ধ। অফিস শেষ, বের হওয়া জরুরি। পুলিশ বলছে, অপেক্ষা করতে।’
একই কথা বলেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সবগুলো গেট বন্ধ। কীভাবে বের হব।’ পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, ‘এর আগেও দেখেছেন আন্দোলন করতে গিয়ে আন্দোলনকারীরা সচিবালয় ঢুকে পড়েন। এটা প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাময়িক গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
এর কিছু সময় পরে সচিবালয়ের পেছনের দিকে একটি ছোট গেট খুলে দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাহির হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ওই গেটের ভেতরে ও বাইরে এ সময় প্রচুর সংখ্যক পুলিশ সদস্য প্রহরায় দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, রোববারও (১০ নভেম্বর) গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের পালটাপালটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় সচিবালয়ের সবগুলো গেইট বন্ধ রাখা হয়।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম