‘নির্বাচনের মাধ্যমে আ.লীগকে বাতিল করলে সেটা পার্মানেন্ট হবে’
১১ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৫৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আওয়ামী লীগকে বাতিল করতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগকে বাতিল করলে সেটাই হবে আসল বাতিল।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে এ আলোচনা সভা ও পেশাজীবী সমাবেশ হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে যদি আপনাকে বাতিল করতে হয় রাজনৈতিকভাবে, সেটা নির্বাচনের মাধ্যমে বাতিল করা সবচেয়ে সহজ। সেই বাতিল হবে পার্মানেন্ট বাতিল। অন্য বাতিলে কাজ হবে না। আপনি অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় বাতিলে গেলে, সেই বাতিল কিন্তু সাময়িক কাজ করবে, দীর্ঘমেয়াদে কাজ করবে না। জনগণ যখন বাতিল করবে আওয়ামী লীগকে, সেটাই হচ্ছে আসল বাতিল। আমাদের ওদিকে যেতে হবে।’
‘সকলের অধিকার সমুন্নত রেখে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হবে। কারণ আমরা তো অধিকারের জন্য লড়াই করেছি, অধিকারের জন্য জীবন দিয়েছি, অধিকারের জন্য জেলে গেছি। সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার অধিকার আবার কারও নেই।’
‘দেশে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক খেলাধূলা চলছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অনেকে আমাকে বলেন, আবার কি শুরু হয়েছে দেশে ? স্বৈরাচার চলে গেছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, আমাদের কি আবার ‘ইয়ের’ মধ্য দিয়ে যেতে হবে ? আমি বলেছি- চিন্তার কোনো কারণ নেই। খেলাধূলা যারা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না। তারা বিএনপির শক্তি বুঝতে পারছে না। এই বিএনপি সেই বিএনপি নয়। এই বিএনপি অনেক শক্তিশালী অবস্থানে, এর শেকড় অনেক গভীরে চলে গেছে। এই বিএনপিকে টলানোর সাধ্য কারও নেই।’
এসময় তিনি সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিএনপির কয়েকটা সিদ্ধান্ত তো আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন, না কি ? কি কি সিদ্ধান্ত দেখেছেন ?’ তখন সমবেতরা সমস্বরে ‘প্রেসিডেন্ট, প্রেসিডেন্ট’ বলে জবাব দেন। এরপর খসরু বলেন, ‘সুতরাং এরকম সিদ্ধান্ত দিলে এ অবস্থায় যেতে হবে।’
বিএনপির এ শীর্ষনেতা বলেন, ‘বিএনপিকে জোর করে ক্ষমতার বাইরে রাখার তাদের যে ভাবনা ছিল, ওই যে ওয়ান-ইলেভেনের বিরাজনীতিকরণের মতো, আবার নতুন চিন্তা, আবার নতুন ভাবনা, ক্ষমতার স্বাদ তো কেউ কেউ পেয়েছেন, মনে করছেন এ ক্ষমতা ধরে রাখলে মন্দ কী ! কিন্তু এ স্বাদ পাবার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা ফিরে পাবার জন্য ১৬ বছর যুদ্ধ করেছে। বিএনপিকে ভাঙার জন্য সব ধরনের চেষ্টা হয়েছে। কিছু বাকি নেই, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা- সব হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার চেষ্টার মধ্যেও দেশনেত্রী টলেননি, তারেক রহমান সাহেব টলেননি, বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ টলেনি। সবার অবস্থান শক্ত।’
‘আমরা গত ১৫-১৬ বছর ধরে সবাই কঠিন সময় অতিক্রম করেছি। আমাদের নেতাকর্মীরা গুমের শিকার হয়েছে, খুনের শিকার হয়েছে, মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছে- ৬০ লক্ষের বেশি মিথ্যা মামলায় আসামি। আমাদের নেতাকর্মীরা ব্যবসা হারিয়েছে, চাকরি হারিয়েছে, বাড়িঘরে থাকতে পারেনি, নিজের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হতে হয়েছে পুলিশসহ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে। ১৬টা বছর এভাবে বিএনপি নেতাকর্মীরা অতিক্রম করেছে। তাদের যে ত্যাগ, এ ত্যাগের মাধ্যমে তারা জ্বলেপুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের আর কারও কিছু করার সুযোগ কারও নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্ট করেছি, আমাদের অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। কিন্তু একটা লাভ হয়েছে, আমাদের নেতাকর্মীরা, আমাদের এ দলটি কিন্তু ত্যাগ স্বীকার করতে শিখে গেছে। একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে আমার নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান সাহেব থেকে শুরু করে একেবারে নিচের নেতাকর্মীরা পর্যন্ত সবাই ত্যাগ স্বীকার করতে শিখেছে। একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক কষ্ট হলেও, সময় কঠিন হলেও এটা কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে অনেক ওপরের লেভেলে নিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও এটা আমি বলছি। তাই আজ আমাদের বুকে সাহস হয়েছে, কোনো শক্তি আমাদের টলাতে পারবে না। কোনো শক্তি টলাতে পারবে না।’
দেশের মানুষ নির্বাচিত সরকারের জন্য অপেক্ষা করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা ফিরে পাবার আকাঙ্খায় অপেক্ষা করছে, তার ভোটাধিকার প্রয়োগের অপেক্ষা করছে, তার নির্বাচিত সংসদ, সরকার গঠনের জন্য অপেক্ষা করছে, যে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার জনগণের কাছে জবাব দেয়ার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে। অন্য কোনো সরকার দায়বদ্ধ থাকবে না। কারণ, তাদের তো জনগণের কাছে যেতে হবে না। বিএনপিকে যেতে হবে। যারা রাজনীতি করে তাদের যেতে হবে। সুতরাং জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে বাংলাদেশকে অতিস্বত্তর একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে হবে, সরকার নির্বাচিত করতে হবে, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব ধরনের সংস্কারের প্রত্যাশা রাজনীতিবিদরা পূরণ করবে জানিয়ে খসরু বলেন, ‘যত ধরনের সংস্কারের কথা আমরা আলাপ করছি, সেটা রাজনীতিবিদরাই পূরণ করবে। সংস্কারের কথা বলছেন ? দেশনেত্রী ছয় বছর আগে ভিশন টুয়েন্টি-থার্টিতে সংস্কারের কথা বলেননি ? তখন তো কারও মুখে সংস্কারের কথা শুনিনি। দেশনেত্রী আগামীদিনের বাংলাদেশ কেমন হবে সেটা ছয় বছর আগে উনার ভিশনের মধ্যে পরিস্কার করেছিলেন। দেশনায়েক তারেক রহমান সাহেব এক বছর আগে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখন শেখ হাসিনারও পতন হয়নি, এত বড় বড় বিশ্লেষকদেরও আবির্ভাব হয়নি।’
‘সেই ৩১ দফায় বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে যে ধরনের সংস্কারের দরকার, সবকিছু পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে। সংস্কারের জন্য আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা দায়বদ্ধ জাতির কাছে। ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব বিএনপি একা করেনি। ৪২টি দল, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল, আমরা সবাই মিলে করেছি। অর্থাৎ জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আমরা ৩১ দফা করেছি। আমরা ৪২টা দল প্রতিজ্ঞাবদ্ধ জাতির কাছে এ সংস্কার করার জন্য। আপনারা কতটুকু পারবেন, কি করবেন জানি না, কিন্তু আমরা পারবো, আমরা করবো। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
শুধুমাত্র ৩১ দফা দিয়েই বিএনপি সবকিছু শেষ করেনি মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, ‘তারেক রহমান সাহেব এ ৩১ দফা কিভাবে বাস্তবায়ন করবেন সেটাও পরিস্কার করে দিয়েছেন। অর্থাৎ নির্বাচনের পরে জনগণ যদি আমাদের রায় দেন, তারেক রহমান সাহেব বলেছেন বিএনপি একা সরকার গঠন করবে না, বিএনপি জাতীয় সরকার গঠন করবে। এ জাতীয় সরকার ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করবে। আমরা যারা ৩১ দফা প্রস্তুত করেছিলাম, জাতীয় সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে আমরা সবাই মিলে ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করবো। সবকিছু পরিস্কারভাবে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। কিছু বাকি নেই।’
‘আবার বলছি, অন্তর্বর্তী সরকার যদি জাতীয় ঐক্যমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো সংস্কার করতে চায়, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সেগুলো জাতীয় ঐক্যমতের পরিপ্রেক্ষিতে হতে হবে। যেখানে ঐক্যমত্য হবে না, সেগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো আগামী নির্বাচনের আগে মানুষের কাছে যাবে, জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রস্তাব পাস করলে কোনো অসুবিধা নেই, এটাই তো নিয়ম, তারপর সংসদে সেটা পাস হবে। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার করলে, সংসদে তো সেটা আবার রেটিফাই করতে হবে। সুতরাং যেটুকু করতে পারেন, আমাদের আপত্তি নেই। এর মধ্যে ঐক্যমতের পরিপ্রেক্ষিতে যদি দশটা সংস্কার করতে পারেন, তাহলে আমরা রাজি আছি। ঐক্যমতের পরিপ্রেক্ষিতে, কথাটা কিন্তু, এর বাইরে নয়। আর বাকিগুলো জনগণের কাছে যাবে, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।’
সবচেয়ে বড় সংস্কার হচ্ছে নির্বাচনী সংস্কার – এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সব কথা শুনছি, শুধু নির্বাচনী সংস্কারের কথা শুনছি না। একটা কমিশন গঠন করেছে, আমরা খুশি হয়েছি। ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে, আমরা অপেক্ষা করছি। আমরাও কিন্তু নির্বাচনী সংস্কারের জন্য সবকিছু তৈরি করে রেখেছি। আমাদের সংস্কার তো আজকের না, বাংলাদেশ আগামীদিনে কি হবে, সেটা নিয়ে আমরা বহুদিন ধরে কাজ করছি। ক্ষমতায় যেদিন বিএনপি বসবে, সেদিন থেকে ইনশল্লাহ সংস্কার কাজ শুরু হবে। বিচার বিভাগের সংস্কার, যেদিন থেকে বিএনপি বসবে ওইদিন থেকে শুরু হবে। একটা দিনও আমরা নষ্ট করবো না। শিক্ষাখাত, ব্যবসায়ীদের বিষয়, সব খাতের সংস্কার, সবকিছু প্রস্তুত। ডে-ওয়ান থেকে সংস্কারের কাজ শুরু হবে।’
‘আর কারা কি করবে আমরা জানি না, আমরা কি করবো সেটা আমরা জানি। আগামীদিনে বিএনপি সরকার গঠন করলে, বাংলাদেশ নিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে, দেশকে সেখানে নিয়ে যাবে ইনশল্লাহ। একটা কথা বলি, শেখ হাসিনা পলায়ন করার পরে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি সাধারণ মানুষের মনোজগতের বিশাল পরিবর্তন হয়ে গেছে। এই মনোজগতের যে পরিবর্তন, যে স্বপ্ন দেখছে জনগণ, রাজনীতিবিদরা যদি সেই স্বপ্ন না দেখে, তাহেলে সেই রাজনীতির কোনো ভবিষ্যৎ নেই। বিএনপি এটা বুঝেছে, অনুধাবন করেছে, ধারণ করেছে এবং এটা শতভাগ প্রয়োগ করে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী, নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা অনুযায়ী, কাজটা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সুতরাং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি নির্বাচিত সরকারের দরকার।’
‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের’ গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এবারের সাতই নভেম্বর অর্থাৎ বিপ্লব ও সংহতি দিবসের গুরুত্বটা আমরা অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি দিচ্ছি। এবার সাতই নভেম্বরের কর্মসূচিটা অনেক ব্যাপকভাবে করা হচ্ছে, দীর্ঘসময় ধরে করা হচ্ছে। এটা শুধু কর্মসূচি নয়। বাংলাদেশের মানুষের যে চিন্তা, আকাঙ্খা, বাংলাদেশকে নিয়ে, বাংলাদেশের মানুষ, সিপাহি-জনতা সেদিন রাস্তায় নেমেছিল, যে পরিবর্তিত বাংলাদেশের কথা চিন্তা হয়েছিল, যে পরিবর্তিত বাংলাদেশের কথা চিন্তা করা হয়েছিল, সেই দিনটি হচ্ছে সাতই নভেম্বর। স্বাধীনতার পরে, এটা আমি বলতে চাই, সেই দিনটি হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য অনেকটা দ্বিতীয় স্বাধীনতা।’
‘স্বাধীনতার যে ভাবনা, যে চিন্তা, যে আকাঙ্খা ছিল, সেটা স্বাধীনতার পরে সেদিন পূর্ণ হয়নি। বরং স্বাধীনতার পরে সেটাকে ভুলুন্ঠিত করা হয়েছিল। একদলীয় শাসন, সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়া, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করে দেয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি, জীবনের নিরাপত্তাহীনতা, কালো আইন, এসবের মাধ্যমে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্রের লড়াই ছিল, সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্খা, মুক্তিযুদ্ধের যে ভাবনা, মুক্তিযুদ্ধের যে স্যাক্রিফাইস, সেটা বাংলাদেশের মানুষ আবার নতুনভাবে পেয়েছে, নতুনভাবে গ্রহণ করেছে এবং উজ্জীবীত হয়েছে সাতই নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘আজকের প্রেক্ষাপটে স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতনের মধ্য দিয়ে আজ যে আরেকটা বাংলাদেশের কথা চিন্তা করছি, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের চিন্তা করছি, একটা যে নতুন বাংলাদেশের চিন্তা করছি, সাতই নভেম্বরও ভিন্ন প্রেক্ষাপটে একই বিষয় ছিল। স্বাধীনতার পর যে বাকশাল এবং একদলীয় স্বৈরাচার সৃষ্টি হয়েছিল, সৈনিক-জনতা সেদিন শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করার মধ্য দিয়ে আরেকটি নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছিল।’
‘একেকবার বাংলাদেশে স্বাধীনতা আসে, আবার সেটা হরণ হয়ে যায় স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের মাধ্যমে। প্রতিবারই সেটা মুক্তিলাভ করেছে বিএনপির মাধ্যমে। প্রথমে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মাধ্যমে এবং এবার দেশনায়ক তারেক রহমানের মাধ্যমে। প্রতিটি মুক্তি এসেছে বিএনপির নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে। এজন্য সাতই নভেম্বর আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। স্বৈরাচারের পদত্যাগ এবং তাদের ক্ষমতাচ্যুত করার দিনটি আমদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবার পাঁচই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার স্বৈরাচারকে বিদায়, বিএনপির নেতৃত্বে, বিএনপির অবদানের মাধ্যমে দেশকে একটি সংকটময়, একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন সময় থেকে মুক্ত করা গেছে।’
তিনি বলেন, সাতই নভেম্বর গত ১৫-১৬ বছর আমরা সঠিকভাবে পালন করতে পারিনি। এবার বড় করে পালন করছি মানুষের কাছে একটা ম্যাসেজ দেয়ার জন্য যে, বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষের দল, এ দলটি স্বাধীনতার পক্ষের দল, এ দলটি মানবাধিকারের পক্ষের দল, এ দলটি অর্থনৈতিক মুক্তির পক্ষের দল, এ দলটি বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার দল, এ দলটি বাংলাদেশের সত্যিকার সংবিধান রক্ষার দল, এ দল উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নত করার দল।’
সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি’র সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী ও প্রকৌশলী জানে আলম সেলিমের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, নগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, ড্যাব চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দীন, সিএমইউজে সভাপতি সাংবাদিক মো. শাহনওয়াজ, জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দীন আহমেদ মানিক ও মহানগর সভাপতি অধ্যাপক ডা. আব্বাস উদ্দীন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের সভাপতি এম এ সাফা চৌধুরী এবং ব্যাংকার মেহরাব হোসেন খান।
সারাবাংলা/আরডি/এসআর