‘আমাদের কষ্ট উপদেষ্টারা এসে দেখে যাক’
১৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৫০
ঢাকা: বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাত ৯টা ৪০ মিনিট। তখনও বন্ধ রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সামনের মূল সড়ক। কারণ, রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন নিটোরে চিকিৎসাধীন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ও তাদের স্বজনরা। তাদের দাবি, রাতের মধ্যেই যেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা এসে আহতদের কষ্ট দেখে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেউ হুইল চেয়ারে বসে, আবার কেউ ভাঙা পা নিয়েই সড়কে বসে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষুব্ধরা বলছেন, সাড়ে তিন মাস হয়ে গেলেও তাদের সুচিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। তাই উপদেষ্টারা না আসা পর্যন্ত রাস্তা ছাড়া হবে না। এক পর্যায়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বিভিন্ন দাবি জানানোর পাশাপাশি নিটোরে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয় বলেও অভিযোগ জানান বিক্ষুব্ধরা।
এদিকে, সড়কে অবস্থান নেওয়া আহতদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছেন বৈষম্যবিবরোধী ছাত্র-আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন, তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু আজও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত না হওয়া সরকারের বড় ব্যর্থতা।’
এদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে ‘জুলাই শহিদ ফাউন্ডেশন’র পক্ষ থেকে আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তিনি আহতদের সুচিকিৎসা ও প্রয়োজনে বিদেশে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি কোনো সমাধানে আসতে পারেননি।
আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
স্নিগ্ধ আন্দোলনকারীদের প্রথমে জুলাই ফাউন্ডেশন কিভাবে কাজ করে তা জানাতে চেষ্টা করেন। আন্দোলনকারীরা তাকে তাদের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনে অংশ নিতে অনুরোধ করেন। এ সময় স্নিগ্ধ বলেন, ‘আপনারা আন্দোলন করছেন, যতক্ষণ দরকার, আমি থাকব।’ আন্দোলনকারীরা তখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। উত্তরে স্নিগ্ধ বলেন, ‘আমি শহিদ পরিবার থেকে আপনাদের কাছে এসেছি। এর চেয়ে কি উপদেষ্টারা বড় হয়ে গেল।’
তখন আন্দোলনকারীরা বারবার বলতে থাকে, উপদেষ্টাদের এখানে আসতে হবে। পরে স্নিগ্ধ আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। তবে তারা তার কথা না শুনে স্লোগান দিতে থাকেন, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ।’
এর আগে, এদিন দুপুর থেকে রাজধানীর শ্যামলীর শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সড়কের দুই পাশ আটকে রেখে শুরু হয় বিক্ষোভ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত যা রাতেও চলছে। ফলে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে, ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিস ফেরত মানুষেরা। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে যেতে দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম