রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিল চেয়ে তিন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে
১৪ নভেম্বর ২০২৪ ২২:২২ | আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ২২:২৪
রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন তিন শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জোহা চত্বরে এ অনশনে বসেন পপুলেশন সায়েন্সেস অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মেহেদী মারুফ, ফোকলোর বিভাগের আল শাহরিয়ার, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের মেহেদী হাসান মাসুম।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, পোষ্য কোটা রাখার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা পিছিয়ে পড়া কোনো জনগোষ্ঠী নয়। তাদের ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাওয়া কোনভাবেই কাম্য নয়। যারা পিছিয়ে পড়া তাদের বিষয় আলাদা। কিন্তু তারা তো সন্তানদের যথাযথ সুযোগসুবিধা দিয়ে বড় করছেন। তাহলে এই সুবিধা তারা কিভাবে নেন প্রশ্ন তোলেন তারা। অবিলম্বে এ কোটা বাতিলের দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে চান তারা।
আমরণ অনশনে বসে মেহেদী হাসান মাসুম বলেন, ‘রাবিতে ১ হাজার ২০০ এর মত শিক্ষক আছেন। এর মধ্যে ৮০০ শিক্ষকই কোনো না কোনো পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ। পোষ্য কোটার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষে যারা ভর্তি হয়, তারাও অলিখিত ভাবেই শিউর হয়ে যায় তারা ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হবে। যে শিক্ষার্থীরা ৩০ পেয়ে চান্স পায়, ৪০ পর্যন্ত পায় না তারাই ভবিষ্যতে শিক্ষক হয়। তদন্ত করলে এসব বেরিয়ে আসবে। আমাদের যে দাবি ২০১৮ সাল থেকে হয়ে আসছে এবং এর জন্য ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার প্রাণ গেল, সেই বিষয়টা আবার কেনো রাবিতে হয়? আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত আমারন অনশন চালিয়ে যাব, যতক্ষণ পর্যন্ত লিখিতভাবে পোষ্য কোটা বাতিল না হবে। আমাদের মৌখিকভাবে বললেও আমরা উঠবো না।’
এ দিকে পোষ্য কোটা বাতিলে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। অবিলম্বে দাবি মেনে নেয়া না হলে আমরণ অনশনে বসারও ঘোষণা দেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘প্রায় ৫০ বছর ধরে পোষ্য কোটা চলে আসছে। আমরা এবার এই কোটা সংস্কারে কমিটি করে পর্যালোচনা করেছি। ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করেছি। বিষয়টি নিয়ে উপ-কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। অধিকাংশের মতামত কোটা রাখার পক্ষে থাকায় সেটা বাতিল করা সম্ভব হয়নি। তবে ক্রমাগত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথমবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় মোট কোটার ৩ শতাংশ পোষ্য কোটা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভর্তি উপ-কমিটির এই সিদ্ধান্তের পর শিক্ষার্থীরা সমালোচনা শুরু করেছে। বিগত সময়ে বর্তমান উপাচার্যকে পোষ্য কোটার বিপক্ষে অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু উপাচার্যের দায়িত্ব নেয়ার পর পোষ্য কোটা নিয়ে তার বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যম্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচিত হয়েছে।
সারাবাংলা/এসআর