বায়ুদূষণের ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে তাজমহল, বন্ধ সব নির্মাণকাজ ও স্কুল
১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৩৮
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বায়ুদূষণ তীব্রভাবে বাড়ছে। এর তীব্রতা এতোটাই যে ১০০ মাইল দূরে অবস্থিত তাজমহলও ধোঁয়াশায় ঢেকে গেছে। এই পরিস্থিতি এড়াতে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে সব নির্মাণকাজ ও প্রাথমিক স্কুলগুলো।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনা জানিয়েছেন, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) থেকে দিল্লির সব প্রাথমিক স্কুলে অনলাইন পাঠদান চলবে।
দূষণ মোকাবিলায় শুক্রবার থেকেই কার্যকর হচ্ছে তৃতীয় স্তরের সতর্কতা (গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৩ বা জিআরএপি-৩)।
এতে এখনই প্রয়োজন নেই, এমন নির্মাণের কাজ বা ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং কিছু সরকারি পরিকাঠামো সংক্রান্ত নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকবে।
নিয়ন্ত্রণে থাকবে বাস চলাচলও। আন্তঃরাজ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক, সিএনজি এবং ডিজে়ল চালিত বিএস-৬ বাস ছাড়া অন্য কোনও বাস চলাচল করবে না। বিএস ৩-এর নিচে থাকা পেট্রল গাড়ি এবং বিএস ৪-এর নিচে থাকা ডিজেল গাড়ি চলাচল করতে পারবে না দিল্লির রাস্তায়। একই নিয়ম কার্যকর থাকবে দিল্লি সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ, গাজিয়াবাদ এবং নয়ডায়।
একমাত্র অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ডিজেল চালিত জেনারেটর ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া, জিআরএপি-৩ কার্যকর থাকাকালীন রাস্তায় ধুলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও বেশি পরিমাণে পানি ছেটানোর ব্যবস্থা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মানের সূচক পৌঁছে ছিল ৪২৮-এ। দিল্লির এই দূষণ যে হারে বেড়েছে তাতে জিআরএপি-৩ জারি হওয়ার কথা জানায় দিল্লির বাতাসের মান বিষয়ক কমিশন (সিএকিউএম)।
এদিকে,ধোঁয়ার কারণে পুরো দিল্লি এবং উত্তর ভারত জুড়ে ফ্লাইট ও ট্রেনগুলোতে বিলম্ব ও বাতিলসহ আরও অসংখ্য বাধা তৈরি হয়েছে। দূষণের কারণে হাসপাতালে বেড়েছে শ্বাসকষ্ট এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় ভোগা রোগীদের সংখ্যা।
গত সপ্তাহে উত্তর ভারতে বায়ুর মান ছিল পিএম ২.৫ যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সর্বাধিক মাত্রার চেয়ে ৫০ গুণ বেশি।
গ্লোবাল কার্বন প্রজেক্টের নতুন অনুসন্ধান অনুসারে, দিল্লি জুড়ে শ্বাসরুদ্ধকর ধোঁয়া দেখে গবেষকরা গ্রহ-উষ্ণতা বৃদ্ধিকারী জীবাশ্ম জ্বালানী নির্গমন এই বছর উচ্চ রেকর্ডে পৌঁছাবে বলে সতর্ক করেছিলেন।
দ্য ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে ২০১৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, ভারতে ১.৬৭ মিলিয়ন অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী নিম্নমানের বায়ু।
সারাবাংলা/এসডব্লিউ