৩ ফ্রন্টে ইসরায়েলের হামলা তীব্র, যুদ্ধবিরতি আলোচনা সংকটপূর্ণ
১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৫
লেবানন, গাজা এবং সিরিয়ায় ইসরায়েল নতুন করে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, গত ৪৮ ঘণ্টায় বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে।
এসব হামলার উদ্দেশ্য হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা বলে দাবি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব হামলা হিজবুল্লাহর ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল হতে পারে, যেহেতু যুদ্ধবিরতির জন্য পরোক্ষ আলোচনা চলছে।
ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন বলেছেন, হিজবুল্লাহর সাথে লড়াই বন্ধ করার একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, চুক্তি লঙ্ঘন হলে ইসরায়েল লেবাননে নিজেদের স্বাধীনভাবে কার্যক্রম চালানোর অধিকার ধরে রাখবে।
একজন লেবানিজ কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে হিজবুল্লাহ সীমান্ত থেকে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিতে রাজি, তবে ইসরায়েলের চুক্তি লঙ্ঘনের শর্তে হস্তক্ষেপ করার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
গাজা ও সিরিয়ায় হামলা অব্যাহত
গাজায় উত্তরের জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলি সেনারা হামাস যোদ্ধাদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। এ সংঘর্ষে চারজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দুটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় ৪৩,৫০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এছাড়া প্রায় ২০ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম, খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে গাজার হাসপাতালগুলোতে রোগীরা চরম সংকটের মধ্যে রয়েছে।
গাজায় হামাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ইসরায়েলের দাবি মিথ্যা যে তারা বেসামরিক লোকদের মাঝে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এসব অভিযোগকে তাদের হামলার যৌক্তিকতা হিসেবে দেখাচ্ছে।
লেবাননে পরিস্থিতি সংকটময়
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৬৫ জন নিহত এবং ১৪ হাজার ৩৪৪ জন আহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলের উত্তরে, গোলান মালভূমিতে এবং দক্ষিণ লেবাননে প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতি ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে এবং যুদ্ধবিরতির আলোচনা অত্যন্ত সংকটময় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
সারাবাংলা/এনজে