দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার কী করছে— জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৭
ঢাকা: সরকার নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বলেছেন ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার কথা, টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিতরণে ৫৭ লাখ ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করার কথা। জ্বালানি তেলের দাম কমানো ও শিল্প খাতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর কথাও বলেছেন তিনি। পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের চেষ্টাও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ জানান তিনি।
রোববার (১৭ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে তিনি এ ভাষণ দেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বন্যার ফলে অনেক জায়গায় ফসলহানি হয়েছে, ব্যাহত হয়েছে পণ্য সরবরাহ শৃঙ্খল। বন্যা পরবর্তী সময়ে বাজারে শাক-সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। ফলে আপনাদের কষ্ট হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে ডিমের সরবরাহ বাড়ানো জন্য আমরা সাড়ে ৯ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এ জন্য প্রয়োজনীয় শুল্কছাড়ও দেওয়া হয়েছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে ডিমের উৎপাদকরা যেন সরাসরি বাজারে ডিম সরবরাহ করতে পারে, সে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মানুষ যেন স্বল্প মূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারে সে জন্য রাজধানীসহ বিভিন্ন স্পটে সরকারি কিছু পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি নিম্ন আয়ের ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করা হয়েছে। বন্যার ফলে চালের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চাল আমদানিতে শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। আসন্ন রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও দাম যাতে স্বাভাবিক থাকে এ জন্য সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে যাচ্ছে।’
সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ে আমাদের কোনো লুকোছাপা নেই। মূল্যস্ফীতির পূর্ণ তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি রোধে উচ্চ সুদের হার নির্ধারণসহ একাধিক নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শস্য আমদানিতে এলসি সীমা অপসারণ এবং সরবরাহ চেইন সংক্ষিপ্ত করাও রয়েছে।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘সামান্য হলেও জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে। শিল্প কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেন স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ব্যাহত না হয় এবং রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। গণশুনানি ছাড়া নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম না বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা আশা করি বাজারে পণ্যমূল্য কমিয়ে আনতে এটা ভূমিকা রাখবে।’
ভাষণে সরকারের ১০০ দিনের বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের গুম-খুনের বিচারের প্রত্যয় জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি সরকারের কূটনৈতিক বিভিন্ন তৎপরতার কথাও উল্লেখ করেন।
সারাবাংলা/টিআর/পিটিএম