শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
১৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৯
ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল (বাস্তবায়ন) করার বিষয়ে এক মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিষয়ে পরর্বতী আদেশের জন্য আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
এ ছাড়া প্রসিকিউশনের অপর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আজ আদালতে হাজির হওয়া ১৩ আসামিকে সে পর্যন্ত কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত আসামি পক্ষের অপর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামির সঙ্গে আইনজীবীদের সাক্ষাতের অনুমতি দেন। একই সঙ্গে আসামিদের পরিবারের সদস্যরাও আসামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি দেন। এ বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে তত্বাবধান করতে বলা হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন— বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। এ সময় প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী তামিমসহ অন্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন।
আর অভিযুক্ত তোফিক ই এলাহী চৌধুরী ও ফারুক খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু। আর দীপু মনি ও হাসানুল হক ইনুর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আবুল হাসান।
তবে এদিন আবদুর রাজ্জাককে আদালতে হাজির করা হয়নি। তবে অন্য ১৩ আসামি উপস্থিত ছিলেন।
তারা হলেন— সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, গোলাম দস্তগীর গাজী, শাহজাহান খান, দীপু মনি, ফারুক খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, জুনায়েদ আহমেদ পলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী। আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
এদিন বেলা ১১টার দিকে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাসে তোলা হয়। এরপর জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে তাদের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো।
১৩ আসামি হলেন— সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, সালমান এফ রহমান, ড.তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম। এদিকে ড. আবদুর রাজ্জাককে আদালতে হাজির করা হয়নি।
গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে অর্ধশতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর গ্রেফতারকৃত ১৪ আসামিকে আজকের দিনে (১৮ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এইচআই