পাকিস্তানের জাহাজ নিয়ে গুজব রটনাকারীরা দেশের শত্রু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:০২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজ নিয়ে যারা গুজব রটাচ্ছেন, তারা সবাই দেশের শত্রু বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমার দেশ সবার জন্য খোলা। এ জাহাজের ভেতরে অনেক কিছু এসেছে। যেমন- খেজুর, পেঁয়াজ, আলু। এই পণ্যগুলো রোজার সময় দরকার। এগুলো কি আমরা আসতে দেব না? যারা এগুলো রটাচ্ছে তারা আমাদের দেশের শত্রু।’
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে সিএমপি কমিশনার কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা একথা বলেন।
পাকিস্তানের করাচি থেকে কনটেইনার নিয়ে আসা জাহাজ নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘এ জাহাজটা মিডল ইস্ট থেকে আসছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে অন্য একটি দেশে গেছে। সেখান থেকে আমাদের দেশে এসেছে। আমাদের এখানে কোনো দেশের জাহাজ আসা নিষিদ্ধ আছে? সকলের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর উম্মুক্ত। অন্য দেশের জাহাজ আসলে সমস্যা কি। আমরা কি কারো কাছে বন্দি নাকি যে আমি শুধু তাকেই সেবা করব।’
গত ১১ নভেম্বর পাকিস্তানের করাচি থেকে কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘ইউয়ান শিয়াং ফা ঝাং’। জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ‘এইচ আর শিপিং লাইন’, যেটি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরে পাকিস্তান থেকে প্রথমবারের মতো সরাসরি আসা এ জাহাজ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করলে পাশ্ববর্তী দেশ সুবিধা পেয়ে যায় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের যে ভুল হয় না, তা নয়। আমাদের ভুল হলে ধরিয়ে দিন। আমরা চুরি করলে আমাদের বলেন যে, আপনি খারাপ কাজ করছেন। পয়সা মারছেন। আমরা যদি কোনো জায়গায় পয়সা খাই, আপনি বলেন। আমি তো বলে দিয়েছি মুক্তভাবে বলুন। আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করব। কিন্তু আপনাদের কাছে অনুরোধ—মিথ্যা সংবাদ দেবেন না। যেটা ঘটেনি সেটা বলবেন না। এতে কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ সুবিধা পেয়ে যায়।’
‘আমাদের দেশের মিডিয়ার যে একটা সুনাম আছে, পার্শ্ববর্তী দেশের মিডিয়ার অত সুনাম নাই। তারা মিথ্যাই প্রচার করে সবচেয়ে বেশি। আর এ মিথ্যাতাকে কাউন্টার করতে পারেন শুধু আপনারা (সাংবাদিক)। আমি বললে লোকে অত বিশ্বাস করবে না যতটা না আপনাকে করবে। আমি অনুরোধ করবো, আপনারা এটাকে কাউন্টার করবেন।’
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় চট্টগ্রামে ৫০ জন অস্ত্রধারীকে চিহ্নিত করলেও সবাইকে কেন গ্রেফতারের আওতায় আনা যায়নি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অস্ত্রধারী অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবসময় সবকিছু প্রকাশ করা যায় না।’
এসময় উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার ও র্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ককে অস্ত্রধারীদের তালিকা করে তাদের গ্রেফতার করতে তাৎক্ষনিক নির্দেশ দেন।
এসময় পুলিশের মহাপরিদর্শক ময়নুল ইসলাম, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, জেলার প্রশাসক ফরিদা খানম ও র্যাবের মহাপরিচালক শহিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/এমপি
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী