Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সামান্য অসুস্থতায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে মানুষ আরও অসুস্থ হচ্ছে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৪

ঢাকা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, এখন সামান্য অসুস্থ হলেই মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছে। এতে ভয়াবহ রূপে বেড়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স। এর কারণে মানুষ অসুস্থ থেকে আরও অসুস্থ হচ্ছে। এতে মানুষের খরচ বাড়ছে, বাড়ছে রাষ্ট্রের খরচও।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) জনসচেতনতা সপ্তাহ-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সেমিনারে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির ব্যাপারে অত্যন্ত দেরি হয়েছে উল্লেখ করেন প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে, এর অর্থ এই নয়-স্বাস্থ্যের দিক থেকে আমরা অনেক উন্নত। আমরা বেঁচে আছি, তবে ভালোভাবে বাঁচছি না। সুস্থতার জন্য ওষুধের ওপর নির্ভর নয় বরং ওষুধ ছাড়া আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এখনও অনেক মানুষ অসুখ হলেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে। এদিকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হওয়ার ফলে মানুষ তথা রাষ্ট্রের খরচ বাড়ছে। আর মানুষ অসুস্থ থেকে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদা আখতার বলেন, মানবদেহে ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে আমাদের শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হচ্ছে। তার চেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হলো, আমরা যে অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছি, তা আবার পরিবেশে ফিরে যাচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে কেউ ভাবছে না, এটি যে ভাববার বিষয় তা আমাদের ঠিক করতে হবে।

সেমিনারে নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্বও তুলে ধরেন ফরিদা আখতার।

তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য কথাতেই আপত্তি রয়েছে। খাদ্য অনিরাপদ নয়-খাদ্য নিরাপদ হতে হবে। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে প্রমাণ হয়েছে তরুণরাই এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, খাদ্যকে অনিরাপদ করার জন্য বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে, তা আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এখানে আমাদের কাজ করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশকে সুস্থ রাখতে তরুণ ছাত্রদের এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

মানুষ, প্রাণী এবং আমাদের পরিবেশের জন্য সর্বোত্তম স্বাস্থ্য অর্জনের জন্য একাধিক শাখার সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা ওয়ান হেলথ নিয়েও কথা বলেন প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ওয়ান হেলথ বলতে যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয় তাহলে শুধু তাদের বিষয় নিয়েই কাজ করবে। ওয়ান+ওয়ান=ওয়ান হবে নাকি ওয়ান বলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অথবা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বুঝাবে তা ভেবে দেখা উচিৎ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য বক্তারা প্রাণিজাত খাদ্য উৎপাদন ও চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করণসহ উত্তম খামার চর্চায় খামারিকে উৎসাহ প্রদান, অ্যান্টিবায়োটিক প্রত্যাহার কাল সম্পর্কে খামারিকে সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তারা বলেন, প্রেসক্রিপশনের সময় সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক নির্বাচন, মাত্রা, ব্যবহার ও প্রয়োগবিধি নিশ্চিত করতে হবে। জীবাণু সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে অ্যান্টিবায়োটিক নির্বাচন করা এবং সম্ভব হলে অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প ব্যবহার করার জন্যও সেমিনারে মতামত প্রদান করা হয়।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক, মৎস্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, ফ্লেমিং ফান্ড গ্রান্ট বাংলাদেশের টিম লিড অধ্যাপক ড. শাহ্ মনির হোসেন, সিস্টেম স্ট্রেনদেনিং ফর ওয়ান হেলথের চিফ অব পার্টি অধ্যাপক ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথসহ অন্যান্যরা।

সারাবাংলা/এসবি/এসআর

অ্যান্টিবায়োটিক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর