‘বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয় বৈষম্যরোধীরা’
২০ নভেম্বর ২০২৪ ০২:২১
খুলনা: ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর জীবনের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পথ ধরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
তিনি বলেন, পতিত মাফিয়া সরকারের বিরুদ্ধে দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ১৭ বছর রাজপথে আন্দোলন করেছি। বিএনপির চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একপর্যায়ে যুক্ত হয় বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একদিকে বিএনপির আন্দোলন, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যখন বন্দুকের নলের জোরে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার নিবৃত্ত করার অপচেষ্টা করেছিল, তখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের সব স্তরের জনগণের অংশগ্রহণে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর জীবনের বিনিময়ে আমরা দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাই।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে দিঘলিয়া উপজেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে তারেক রহমানের ৩১ দফার আলোকে সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে সেনহাটি শিববাড়ি মাঠে অনুষ্ঠিত সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আজিজুল বারী হেলাল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সরকার। আমরা চাই, এই সরকার অল্প সময়ের মধ্যে দেশে একটি সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত সরকার উপহার দেবে। কিন্তু সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা মাফিয়া সরকারের দোসর কয়েকজন উপদেষ্টা কথিত সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করছেন। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি ড. ইউনুসের দেওয়া ভাষণেও জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু ছিল না। নির্বাচন কবে হবে— এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তরের কথা জনগণ জানতে চায়।
দেশের সব সংকটে জিয়া পরিবার নেতৃত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে এই জাতিকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন। নব্বইয়ে স্বৈরাচার এরশাদের হাত থেকেও জাতিকে মুক্তি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ২০২৪ সালে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার হাত থেকে ছাত্র-জনতা যে আন্দোলন করেছেন, সে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব ও পরামর্শ দিয়ে জাতিকে মুক্ত করেছেন তারেক রহমান।
আজিজুল বারী হেলাল আরও বলেন, ১৭ বছরের দিঘলিয়ার মানুষ বাড়িতে থাকতে পারেনি। মামলা-হামলা দিয়ে হয়রানি করেছে আওয়ামী লীগ। কারা হামলা করেছে, কারা মামলা দিয়েছে, তা আমরা জানি। কিন্তু আমরা সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। যারা দোষী, যারা অবিচার করেছে, তাদের বিচার করবে সরকার। আমরা কখনোই আইন হাতে তুলে নেব না।
বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করতে পারলে দিঘলিয়ার উন্নয়ন করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন হেলাল। বলেন, দিঘলিয়ায় একসময় শিল্প কারখানা ছিল। এ অঞ্চলের মানুষের ঘুম ভাঙত মিলের হুইসেলের শব্দে। এখন এ অঞ্চল মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। শুধু দিঘলিয়াই নয়, খুলনার অনেক মিল-কারখানা বন্ধ হয়েছে ভোটচোর সরকারের দুর্নীতির কারণে। বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে আবারও হারানো শিল্পাঞ্চল ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ‘প্রেতাত্মা’রা দায়ী বলে মন্তব্য করেন আজিজুল বারী হেলাল। বলেন, ওএমএসের লাইন ধীরে ধীরে দীর্ঘ হলে ইউনুস সরকার বেকায়দায় পড়বে। উপদেষ্টাদের কয়েকজন জীবাণুর মতো সব উপদেষ্টাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।
উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক সাইফুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, সাবেক সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, আবু হোসেন বাবু, আব্দুর রকিব মল্লিক, অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুলসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/টিআর