বিচারের শুদ্ধতায় অধ্যাদেশে আপিলের বিধান খুব সীমাবদ্ধ: আইন উপদেষ্টা
২১ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:০১
ঢাকা: আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচারের শুদ্ধতার জন্য এবং খুব সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রে ‘অন্তবর্তীকালীন আপিল’ এর বিধান আন্তর্জাতিক অপরাধ সংশোধন অধ্যাদেশে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কার কাজ এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো পরিদর্শনে আসেন ড. আসিফ নজরুল।
এর আগে, বুধবার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সংগঠন বা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশের বিধান রাখার প্রস্তাবটি বাদ দেওয়া হয়। তবে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন আইন, ২০২৪’ এর খসড়ায় আদালত যদি মনে করেন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কনসার্নড অথোরিটির (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ) কাছে সুপারিশ করতে পারেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কার কাজ পরিদর্শনে এলে সাংবাদিকরা তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। অধ্যাদেশে ‘অন্তবর্তীকালীন আপিল’ এর বিধান রাখায় ট্র্যাইব্যুনালের বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা হবে কি-না? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, বিচারের শুদ্ধতার জন্য এবং খুব সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রে ‘অন্তবর্তীকালীন আপিল’ এর বিধান আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশে রাখা হয়েছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। সেখানে অস্থায়ীভাবে নির্মিত ভবনে এখন বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই বিচারিক কার্যক্রমের জন্য গঠিত ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় সেটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সরকার। নান্দনিক ও আধুনিকতার সংমিশ্রণে নতুন করে সাজছে ভবনটি। সরেজমিনে দেখা যায় সংস্কার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে গত ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরমধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান হয়। গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। জাজ্জল্যমান এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।
গত ১৪ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এরআগে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়।
সারাবাংলা/ইআ