বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন
২১ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:১৬ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:১৬
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে অতিদ্রুত ইউনিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে। সরকারি হাসপাতালে আইডি কার্ডধারীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবেন।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুর রাজধানীর বিএসএল ভবনের সামনে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসনের রোডম্যাপ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন,আপনারা আগের দিনেও শুনেছেন বাংলাদেশে বৈষমবিরোধী আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফাস্ট ট্র্যাক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। দেশের সমগ্র হাসপাতালে এই নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি সমস্ত হাসপাতালে আহতরা সকল ধরনের চিকিৎসা আজীবন বিনামূল্যে পাবেন।
তিনি বলেন, তাদের চিকিৎসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) স্পেশালাইজড হাসপাতালের কেবিন ব্লক মাল্টি ডিসিপ্লিনারি হাসপাতাল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। আহতদের যারা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন, তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিএসএসএমইউর কেবিন ব্লকে যোগাযোগের অনুরোধ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিএসএমএমইউর স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিচের তলাটি সম্পূর্ণ ডেডিকেটেড করা হয়েছে আহতদের বহির্বিভাগের সেবার জন্য। পর্যায়ক্রমে সেখানে ফিজিওথেরাপি সেবা যুক্ত করা হবে। এ ছাড়া সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে রোবটিক্স ফিজিওথেরাপির জন্য। এজন্য প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি বিএসএমএমইউ বা অন্য যেখানে সুবিধা হয় স্থাপন করা হবে। এই সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে প্রাথমিক পর্যায়ে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ দল আনা হবে।
এ লক্ষ্যে দেশের সমগ্র হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, আহতদের জন্য বিভাগীয় হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে ডেডিকেটেড বেড থাকবে এবং আহতরা ড্যাশবোর্ডে সহজেই দেখতে পারবেন, কোথায় কোন সেবাটা পাওয়া যাবে। যারা চোখেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আনা হচ্ছে। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বিদেশে সুনির্দিষ্ট হাসপাতালে আহতদের পাঠানো হচ্ছে। আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন, বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকজনকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আন্দোলনে আহতদের মানসিক ট্রমা বা আঘাতের বিষয়ে চিকিৎসার জন্য ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথে একটি কেন্দ্রীয় স্থাপনা স্থাপন করা হবে এবং দেশের সরকারি বেসরকারি যারা এ সম্বন্ধে অভিজ্ঞ আছেন, তাদের এই নেটওয়ার্কের আওতায় যুক্ত করা হবে। সেখানে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে স্ক্রিনিং হবে এবং ইন পার্সন আহতদের কাউন্সিলিয়ের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হবে।
আহতদের বিদেশে প্রেরণ নিয়েও কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী।
তিনি বলেন, এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি আছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা স্পষ্ট করতে চাই, যার যার প্রয়োজন ও উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন, রোগী এয়ার এম্বুলেন্সের মাধ্যমে শিফ্ট করা হয়েছে। আজকেও একজন যাবেন। গতকালও একজন গিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যখনই যার প্রয়োজন সেই রোগীদেরকে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে সুনিদিষ্ট পদ্ধতি মেনে সেই হাসপাতাল থেকে সুপারিশের ভিত্তিতে একটি বিশেষজ্ঞ টিমের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে বিদেশে হাসপাতালে পাঠানোর সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসনে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এ সময় জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের দলনেতা খন্দকার জহিরুল ইসলামসহ (অতিরিক্ত সচিব) অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসবি/এমপি
ডা. মো. সায়েদুর রহমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়