‘শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে কমপ্ল্যায়েন্স অর্জিত হলে জিএসপি সুবিধা পাওয়া যাবে’
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:০২
ঢাকা: দেশের শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে কমপ্ল্যায়েন্স অর্জিত হলে জিএসপি সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মিসেস কেলি এমফে রদ্রিগেজ-এর নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংকালে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, মার্কিন দূতাবাসের প্রধান মেগান বোল্ডিংসহ অন্যান্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক মুক্ত প্রবেশের সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পেতে শ্রম অধিকার সংক্রান্ত দেশটির চাহিদা পূরণ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই পথে রয়েছে।
তিনি বলেন, শ্রম অধিকারকে আরো যুগোপযোগী করাসহ শ্রমিকের অধিকার নিয়ে আমরা যে ১১ দফা কর্মসুচি আছে- সেটা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৈঠকে আমরা বিশদ আলোচনা করেছি। আমরা কতো দ্রুত এই ১১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারবো -বৈঠকে সেটাই মূলত আলোচনা হয়েছে।
১১ দফায় কী আছে- জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পেতে গেলে আমাদের লেবার রাইটসের বিষয়ে যে জিনিসগুলো (একটি প্রতিষ্ঠানে আইএলও কনভেনশন, দেশের প্রচলিত শ্রম ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক আইন, বায়ার আচরণবিধি কোম্পানীর নিজস্ব নিয়ম-কানুন) আছে, সেগুলো কমপ্ল্যায়েন্স করতে হবে৷ সেটা করতে পারলে আমরা অবশ্যই জিএসপি সুবিধা পাবো বলে আশা রাখি।
এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, বিষয়টি নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মূলত শ্রমিকের জীবন-যাপন, মানোন্নয়ন এবং ইউনিয়ন এক্টিভিটিস করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে। আমরা সবাই এক লাইনেই কাজ করছি। আজকে মার্কিন প্রতিনিধিদল নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে এখানে এসেছে। তারা শ্রমিকদের লেবার রাইটস ইস্যু, ট্রেড ইউনিয়ন, নিরাপত্তা ও ন্যূনতম মজুরিসহ অন্যান্য বিষয়ে নজর দিতে বলেছে। অন্যদিকে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার সু্বিধা বাড়ানো ও শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের তাগিদ দিয়েছি। প্রতিনিধিদলটি এ বিষয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অনেক সংস্কার কাজে হাত দিয়েছে। শ্রমখাতেও সংস্কার করার জন্য আলাদা একটি টিম কাজ করছে। এখানে শ্রম, পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, অর্থ ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ সকলে সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
১১ দফা কবে বাস্তবায়ন হবে- জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, আমাদের শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটা কর্মপরিকল্পনা রয়েছে, সেটার অগ্রগতিতে তারা আস্থা প্রকাশ করেছে।
আমেরিকার বাজারে এখন প্রায় ১৬ শতাংশ ডিউটি দিয়ে আমাদের পণ্য রপ্তানি করতে হয়। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি। জিএসপি সুবিধা বহাল থাকলে এটা দিতে হতো না। সে জন্য আমরা বলেছি যে, জিএসপি সুবিধায় আমরা থাকতে চাই। জিএসপি ছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয় আমেরিকার বাজারে। আমরা ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি যে সুবিধাটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে পাচ্ছি- সেটা আমরা সব জায়গায় চাচ্ছি। তাদেরকে বলেছি, কিন্তু তারা সেই লাইনে কোনো কথা বলে না। তবে আমরা সেই সুবিধাটা চেয়েছি। আমরা আমাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছি।
বৈঠকে তৈরি পোশাক খাতের অস্থিরতা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে তারা এ খাতকে আরো কীভাবে মানোন্নয়ন করা যায়, সে বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
সারাবাংলা/জেআর/আরএস