হাসনাত বললেন ভারতের প্রেসস্ক্রিপশন, সারজিস বললেন ইসকন ‘তাড়ানো’ হাতের ময়লা
২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:১৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভারতের প্রেসক্রিপশনে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বাংলাদেশে অশান্তি তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। অন্যদিকে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’র সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, ইসকনকে দেশ থেকে তাড়ানোর কাজটি তাদের জন্য হাতের ময়লার মতো। তারা ইসকনকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিও জানিয়েছেন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের টাইগারপাসের এক সমাবেশে দুই ছাত্রনেতা এমন মন্তব্য করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে দুজনেই ইসকনকে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসকন জঙ্গি সংগঠনের রূপ নিয়েছে বলে সমাবেশে দেওয়া বক্তৃতায় উল্লেখ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। বলেন, ‘ইসকনরা জঙ্গি, যারা গত ১৬ বছর ধরে ছিল স্বৈরাচারদের সঙ্গী। আওয়ামী লীগের সহায়তায় ইসকন ১৬ বছর পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে জঙ্গি সংগঠনে রূপ নিয়েছে। স্বৈরাচারের সঙ্গী হয়ে ভারতের প্রেসক্রিপশনে ইসকন বাংলাদেশে অশান্তি তৈরি করছে।’
আরও পড়ুন-
- সাইফুলের জানাজায় মানুষের ঢল
- চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, আটক ৩০
- চট্টগ্রামে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আইনজীবী নিহত
- চিন্ময় কৃষ্ণর মুক্তির দাবিতে মিছিলের চেষ্টা, গ্রেফতার ৬
- জামিন নামঞ্জুর, চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
- আইনজীবী আলিফ হত্যায় ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত ৭: সিএমপি
- অনুসারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় কৃষ্ণকে নেওয়া হলো কারাগারে
‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ভারতের বুবু শেখ হাসিনার ঠাঁই এ বাংলাদেশে আর হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হোক, আমরা বাংলাদেশের মানুষ সেটাকে রুখে দেবো। আমাদের দ্বারা কোনো হিন্দু ও সংখ্যালঘুর সম্পদ লুণ্ঠন হয়নি,’— বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা আরও বলেন, ‘বিদেশে বসে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তি বাংলাদেশকে অশান্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এসব পরিকল্পনার বাস্তবায়ন বাংলাদেশে কখনো ঘটবে না। আমাদের সুশীল সমাজ একটি বিষয় এড়িয়ে যায়— এ দেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদী আছে। আমার দেশে সব ধর্মের সহবস্থান থাকবে। যে হিন্দু , সে হিন্দু ধর্ম পালন করবে। বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবে। আমরা সবার অধিকার রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করবে, তাদের বাংলাদেশে এক হাত জায়গাও দেওয়া হবে না।’
ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে ইসকনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকন হলো জঙ্গি, তারা হচ্ছে স্বৈরাচারের সঙ্গী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব আসামিকে গ্রেফতার করতে হবে। এ স্বৈরাচারী সরকার ও প্রশাসনকে আওয়ামী লীগমুক্ত করতে হবে। বিদেশি ষড়যন্ত্রকে রুখতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আপনি বিএনপি, জামায়াত বা ইসলামিক হতে পারেন, কিন্তু ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।’
সমাবেশে সারজিস আলম বলেন, ‘যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা এ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, নতুন বাংলাদেশ এসেছে, সে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে চিম্ময়-খুনি হাসিনারা উসকানি দেয়। সে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ইসকন ও ভারতের প্রেতাত্মারা উসকানি দেয়। আমরা স্পষ্ট করে সব প্রেতাত্মাদের বলে দিতে চাই— খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি, এমন ছোটখাটো কিছু জঙ্গি ইসকনকে দেশ ছাড়া করা আমাদের জন্য হাতের ময়লা।’
সারজিস আরও বলেন, ‘বীর চট্টলাবাসী, আপনাদের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষকে আমরা বলতে চাই, আমরা সব ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সহানুভূতিকে দুর্বলতা মনে করে, আমরা তাদের ছেড়ে দেবো? আমরা কি জঙ্গী ইসকনকে ছেড়ে দেবো? আমরা আমাদের সাইফুল ভাইয়ের খুনিদের বিচার দেখতে চাই। এ বীর চট্টলায় খুনি ইসকনদের জায়গা হবে না। আমাদের চারপাশে অনেক চক্রান্ত ছিল। আরও চক্রান্ত হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সব চক্রান্তকে মোকাবিলা করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ ও খান তালাত মাহমুদ রাফিসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/টিআর
আইনজীবী হত্যা ইসকন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাইফুল ইসলাম আলিফ সারজিস আলম হাসনাত আব্দুল্লাহ