ভারত বাংলাদেশকে জঙ্গিরাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করছে: গণতন্ত্র মঞ্চ
২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:০৭
ঢাকা: বর্তমানে দেশের বিভিন্ন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, ভারত বাংলাদেশকে জঙ্গিরাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে ছাত্রদের ব্যবহার করে বিভিন্ন ঘটনায় দেশের জনগণকে ব্যথিত করছে। এসব বন্ধের জন্য সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসকন নেতাকে গ্রেফতার করার পর দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। সার্বিক ঘটনার দিকে তাকালে বোঝা যায় লক্ষণ কি হতে পারে। সরকারকে সব কিছু কঠিন হাতে দমন করতে হবে। অন্যথায় এসব ঘটনার দায় সরকার কোনো ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তারা।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) তোপখানা রোড নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে ‘সরকার ও শাসন ব্যবস্থার পরির্বতনে ঐক্যবদ্ধ হন’ শিরোনামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, গণতন্ত্রমঞ্চের সমন্বয়ক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, মাওলানা ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে মো. সাইফুল হক বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন ইস্যুতে দেশে উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) ইসকন নেতাকে গ্রেফতার করাকে কেন্দ্র করে, একজন আইনজীবীকে হত্যা করার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে আবার সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। দেশের মধ্যে এসব ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সরকারকে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করার প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আস্থা সৃষ্টি করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘দেশে বিরাজমান সকল সমস্যা নির্বাচিত সরকার ছাড়া সমাধান করা সম্ভব না। তাই যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা প্রয়োজন।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বর্তমানে দেশের মধ্যে যেসব ঘটনা ঘটছে তা উদ্বেগের বিষয়। এসব ঘটনা অনেক কিছু আশংঙ্কার বার্তা দেয়। তাই সকল রাজনৈতিক দল বসে এসব ঘটনা আপাতত বন্ধ করতে হবে। আমরা চাই না কেউ অস্ত্রের ভাষায় কথা বলুক।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি তার বক্তব্যের শুরুতেই সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন করার আহ্বান জানান। এসময় একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকার পথ হারাতে পারে বলে আপনি মনে করেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর পেছনে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের ষড়যন্ত্র রয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করতে হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে।’
ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘ইসকন নেতার গ্রেফতারের ইস্যুতে ভারত বাংলাদেশে লংমার্চ করতে চায়। ভারতের এই কর্মসূচি ঘোষণা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। ৫ আগস্টের আগে দেশের ছাত্র-জনতা রাজনৈতিক দলগুলো যে ভাবে এক্যবদ্ধ হয়েছিল সে ভাবে আবার ঐক্যবদ্ধ হলে গণঅভ্যুথানের ফসল বেহাত হবে না।‘
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘ইসকন নেতাকে গ্রেফতার করার পর ভারত রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর উস্কানী দিচ্ছে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এইচআই