সরবরাহ বেড়েছে, সবজি ফিরছে ক্রেতার নাগালে
২৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:১০ | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৩:৫৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চড়া দর কমতে শুরু করায় চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে সবজিতে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম ক্রেতার কাছে সহনীয় পর্যায়ে আসতে শুরু করেছে। আলু ছাড়া বেশকিছু সবজির দাম ১০০ টাকার নিচে নেমেছে, যার মধ্যে শীতকালীন সবজিও আছে। বিক্রেতারা বলছেন, এক সপ্তাহ ধরে সরবরাহ বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে সবজির দামে।
তবে চালের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। আলু-পেঁয়াজের দামও আগের মতোই চড়া। মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত। নিত্যপ্রয়োজনীয় শুকনো পণ্যের দামও মোটামুটি স্থিতিশীল দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও আসকার দিঘীর পাড় কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
বাজারে শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি মানভেদে ৩৫ থেকে ৫৫ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ১১০ থেকে ১২০ টাকা ও কাঁচামরিচ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব সবজি গত সপ্তাহে রিয়াজউদ্দিন বাজারে প্রতি কেজি অন্তত ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল বলে জানালেন বিক্রেতা শফিক।
বাজারে শিম প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কাঁকরোল-বরবটি ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও বেগুন মানভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও এগুলোর দাম একই ছিল। পেঁপে মানভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এ ছাড়া লাউ, ঝিঙা, পটল, করলা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, কচুরমুখী, মূলা, পুঁই শাকের বিচি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহ থেকে কেজিতে অন্তত ১০ টাকা কম। লাল শাক, মূলা শাক, পুঁই শাক ও মিষ্টি কুমড়া শাকের দামও কমে ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাজারে নতুন আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি বড় আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, আড়ত থেকে দেশি আলু এখনো ৬১ থেকে ৬৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। খুচরায় ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রির বিকল্প নেই।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জসিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আলু ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজির দাম ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারে দাম কমেছে। উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রচুর সবজি আসছে। এ জন্য দাম কমছে।’
বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাকিস্তানি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১১০ টাকা, মিশরের পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে খুচরায়। সে হিসাবে পাকিস্তানি ও মিশরের পেঁয়াজের দাম কেজিতে অন্তত ১০ টাকা কমেছে। তবে এ পেঁয়াজের খুব বেশি চাহিদা নেই ভোক্তাদের কাছে।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের চালের দাম খুচরায় কিছুটা বাড়তির দিকে দেখা গেছে। আসকার দিঘীর পাড়ের বাজারে বৃহস্পতিবার কাটারিভোগ আতপ ২৫ কেজির বস্তা ২১০০ টাকা, বেতি আতপ ৩২৫০ থেকে ৩৩০০ টাকা, হাফ সেদ্ধ নাজিরশাইল ২২০০ টাকা, পাইজাম আতপ ১৭৮০ থেকে ১৭৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা করে বেড়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্যের মধ্যে দেশি রসুন ২৪০ থেকে ২৪৫ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ৩২০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা, ছোলা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
দুই কেজি প্যাকেট আটা ১২৫ টাকা ও ময়দা ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
বাজারে আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ও কাতল ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, মাগুর ৫০০ টাকা, কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আকারভেদে ইলিশের দাম দেড় হাজার থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে।
মাংসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মুরগির দাম স্থিতিশীল আছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা দরে। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, পাকিস্তানি কক মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য মাংসের মধ্যে গরুর মাংস হাড় ছাড়া ৯৫০ টাকা ও হাড়সহ ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ডিমের দাম স্থিতিশীল আছে। খুচরায় প্রতিডজন ব্রয়লার মুরগির ডিম ১৫০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর