Sunday 08 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাতিসংঘে বাংলাদেশ
চিন্ময়ের গ্রেফতার ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে

সারাবাংলা ডেস্ক
৩০ নভেম্বর ২০২৪ ০২:৩৩ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ০৩:১৪

মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারসহ সংখ্যালঘু নির্যাতনকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বলেছেন, সরকার ধর্ম পরিচয় নির্বিশেষে সবার জন্য স্বাধীনভাবে ধর্ম চর্চা ও মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যসহ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করাই অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুই দিনব্যাপী জাতিসংঘের সংখ্যালঘুবিষয়ক ফোরামের ১৭তম অধিবেশনে বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে এসব বক্তব্য তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম।

ফোরামে দেওয়া বক্তব্যে কয়েকজন অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার নিয়েও অভিযোগ করা হয়।

পরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে আমরা লক্ষ করছি যে কিছু বক্তা চিন্ময় দাসের গ্রেফতারকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে তাকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।

আরিফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি একজন মুসলিম আইনজীবীকে নৃশংসভাবে হত্যা করার পরও আমাদের সরকারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ এবং সব ধর্মের নেতাদের সমর্থন শান্তি বজায় রাখতে ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সহায়তা করেছে।

বিজ্ঞাপন

দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশের মানুষ যখন ধর্মীয় সম্প্রীতির গৌরবজনক উদাহরণ তৈরি করেছে, তখন আমরা দেখতে পেলাম যে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কিছু কুচক্রী মহল ভুয়া, মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন প্রকাশ করছে— এমনটি বলা হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে।

এতে স্থায়ী প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম বলেন, দুঃখজনকভাবে এই ফোরামেও আমরা সেটি হতে দেখেছি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের অনেক অপপ্রচার উন্মোচিত হয়েছে। বাস্তবে কী ঘটছে, তা পর্যবেক্ষণে বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফরে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সরকার।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করেন আরিফুল ইসলাম বলেন, একজন মুসলিম আইনজীবীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর সরকার দ্রুত বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। সব ধর্মের নেতাদের সহায়তায় পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এর মধ্য দিয়ে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো গেছে।

বক্তব্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর দেশে সংঘটিত সহিংসতার পেছনে ধর্মীয় নয়, বরং রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত বিষয় কাজ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই দলীয় রাজনীতিতে যুক্ত। সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের প্রায় সবাই মুসলিম। অল্প কিছু মানুষ আছেন ধর্মীয় সংখ্যালঘু। দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর পদ্ধতিগত কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। বরং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিশ্ব দেখেছে, দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনুসরণ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে রক্ষায় পুরো বাংলাদেশ কীভাবে এগিয়ে এসেছে।

আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশ পুনর্ব্যক্ত করছে যে ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেক বাংলাদেশির নিজ নিজ ধর্ম পালন বা স্বাধীনভাবে মতামতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল লক্ষ্য। এটি আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতাদের বারবার আশ্বস্ত করেছেন এবং সরকারের প্রথম ১০০ দিনে সেটি বারবার প্রমাণিত হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে দুজন উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়েছে।

যেকোনো মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার ব্যাপারে সরকার সবসময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে ত্বরিৎ পদক্ষেপ নেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণের কোনো অপচেষ্টা হলে তা প্রতিহত করা হবে। বাসস।

সারাবাংলা/টিআর

চিন্ময় দাস জাতিসংঘ সংখ্যালঘু নির্যাতন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর